দিঘা সহ পূর্ব মেদিনীপুরে ৯৫০টি ত্রাণ শিবিরে ১ লক্ষ মানুষকে রাখার ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন

সৈকত দাস |

May 24, 2021 | 5:38 PM

সবচেয়ে বেশি ত্রাণ শিবির খোলা হচ্ছে রামনগর ১ এবং ২ ব্লকে। শুধু রামনগর ১ ব্লকে ১৫২ টি ত্রাণ শিবির খোলা হচ্ছে। এই শিবিরে ১২ হাজারের বেশি মানুষকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রামনগর ছাড়া কাঁথি ১ এবং ২ ব্লক, খেজুরি, নন্দীগ্রাম ও হলদিয়া এলাকায় ত্রাণ ও আশ্রয় শিবির খোলা হচ্ছে।

দিঘা সহ পূর্ব মেদিনীপুরে ৯৫০টি ত্রাণ শিবিরে ১ লক্ষ মানুষকে রাখার ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন
ইয়াস নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে তৎপরতা তুঙ্গে

Follow Us

পূর্ব মেদিনীপুর: ইয়াস মোকাবিলা দিঘায় নামানো হল তিনটি নেভির টিম। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সব মিলে তৈরি হল ৫টি NDRF ও ৪টি SDRF টিম।

৫ টি এনডিআরএফ টিমের একটি হলদিয়া, একটি রামনগর ১ নম্বর ব্লকে, একটি দিঘায়, একটি রামনগর ২ নম্বর ব্লকে এবং একটি টিম রাখা হয়েছে কাঁথি ২ নম্বর ব্লকে। এছাড়াও এসডিআরএফের ৪টি টিমকে প্রয়োজন মতো পরিস্থিতি অনুযায়ী পাঠানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

আরও দু’দিন পরে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানবে বলে আবহাওয়া দফতর জানালেও রবিবার সারাদিন তীব্র রোদ আর গুমোট গরমে উপকূল এলাকা জুড়ে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। তবে দুপুরের পর থেকেই আকাশ ঢেকে যায় কালো মেঘে। শুরু হয় বৃষ্টি। আবহাওয়ার পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রেখে ইয়াসের মোকাবিলায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।

প্রাণহানি আটকাতে দুর্গত এলাকা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে এনে জেলার ৯৫০টি আশ্রয় শিবিরে রাখা হচ্ছে। এই সব শিবিরে ১ লক্ষ মানুষকে সরিয়ে এনে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে পূর্বমেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। আগামী ২৬মে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলের কোনও জায়গায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আছড়ে পড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহওয়া দফতর। সে কারণে উপকূল এলাকা থেকে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে ত্রাণ শিবির বা আশ্রয়শিবিরগুলি কোন জায়গায় খোলা হবে তা ঠিক হয়ে গিয়েছে। স্যানিটাইজেশনের কাজও শেষ। সোমবার থেকে সেখানে মানুষজনকে সরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। ২৫ তারিখের মধ্যে সবাইকে সরিয়ে আনার কাজ শেষ হবে।

সবচেয়ে বেশি ত্রাণ শিবির খোলা হচ্ছে রামনগর ১ এবং ২ ব্লকে। শুধু রামনগর ১ ব্লকে ১৫২ টি ত্রাণ শিবির খোলা হচ্ছে। এই শিবিরে ১২ হাজারের বেশি মানুষকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রামনগর ছাড়া কাঁথি ১ এবং ২ ব্লক, খেজুরি, নন্দীগ্রাম ও হলদিয়া এলাকায় ত্রাণ ও আশ্রয় শিবির খোলা হচ্ছে। বিভিন্ন স্কুল, ফ্লাড শেল্টার, ক্লাবে এই সব আশ্রয় শিবির খোলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রতিটি ব্লকে বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, সেচ-সহ বিভিন্ন দফতরের ১৫—২০ টি টিম প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে আশ্রয় শিবিরে মানুষজনকে রাখা যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। প্রতিটি শিবিরে মাস্ক ও স্যানিটাইজার পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা হচ্ছে।

অপরদিকে জরুরি ভিত্তিতে নদী ও সমুদ্র বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। সমুদ্র বাঁধ ছাড়া হুগলি , রূপনারায়ণ, হলদি নদী বাঁধের দুর্বল অংশের সংস্কারের কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। রবিবারও সেচ দফতরের কর্মীরা তাজপুর চাঁদপুর শঙ্করপুর এলাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ করেন।

আরও পড়ুন: আগামী ২ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা-সহ ৬ জেলাতে ঝাঁপিয়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস! এটা কি ইয়াসের প্রভাব? স্পষ্ট করলেন বিশেষজ্ঞরা 

দিঘার সমস্ত হাইমাস্ট লাইট নামিয়ে আনা হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরাও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন। জেলার সমস্ত নদী ও সমুদ্র বাঁধের ওপর সেচ দফতরের কর্মীরা নজর রাখছে বলে জানান জেলা শাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাঝি।

Next Article