গঙ্গাসাগর: গঙ্গাসাগরে ১ কোটি পুণ্যার্থীর ভিড়! অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভাঙল এবার। সোমবার এমনই দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। রবিবার রাত ১২টা ১৩ মিনিট থেকে পুণ্যস্নানের সময় শুরু হয়। ঘড়ির কাঁটা ১২টা ১৩ ছুঁতেই কনকনে শীতের রাতে সাগরে নামেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। হাড়হিম করা ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই শাহিস্নানে সাগরে নামেন তাঁরা। আজ রাত ১২টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত পুণ্যযোগ থাকবে। এখনও কাতারে কাতারে মানুষ স্নান করছেন সাগরে। শুধু তাই নয়, এখনও বাবুঘাট থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী সাগরমুখী।
কাকদ্বীপের লট নম্বর আট ও কচুবেড়িয়াতে ভিড়ে ঠাসা পুণ্যার্থী। দিনভর চলে পুণ্যার্থীদের আসা-যাওয়া। এবার সাগরমেলায় ৬টি স্নানঘাটের বন্দোবস্ত হয়। তবু যেন কমই পড়ে গিয়েছে। উত্তুরে হাওয়া, চারদিক ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া, তবু পুণ্যের খোঁজে সাগরে ডুব দিয়ে চলেছেন পুণ্যার্থীরা।
সাগরস্নানের পর মেলার ২ নম্বর রাস্তা ধরে পিলপিল করে মানুষ চলেছেন কপিলমুনি মন্দিরে পুজো দিতে। রাত থেকে লম্বা লাইন। ভিড় সামাল দিতে ড্রপ গেট দিয়ে আটকে দেওয়া হয় পুণ্যার্থীদের। সোমবার বিকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যের মন্ত্রীরা। অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্নেহাশিষ চক্রবর্তী, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বোস কে ছিলেন না। ছিলেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা ও সুন্দরবনের পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও নলাভাট।
অরূপ বিশ্বাস বলেন, “এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক পুণ্যার্থী ই-স্নান ও ই-দর্শনের সুযোগ উপভোগ করেছেন। মেলাকে দূষণমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব রাখতে সমস্তরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আজ গঙ্গাসাগর মেলা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। বিকাল ৩টে পর্যন্ত যা রিপোর্ট পেয়েছি কাল সারারাত, আজ সারাদিন প্রায় ১ কোটি মানুষ এসেছেন। এটা আরও কয়েক লক্ষ বাড়বে বলেই আশা। এখনও লক্ষ লক্ষ মানুষ পথে আছেন।”
এদিন উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ৬৫ বছরের রামসেবককে মেলা থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কলকাতার এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও অবধি ৩ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে বার্ধক্যজনিত কারণে। ২৩৬ জন পুণ্যার্থী অসুস্থ হয়ে সাগরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ৪২ জনকে উন্নততর চিকিৎসা পরিষেবার জন্য কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবারের মেলায় এখনও অবধি ৩৪১টি পকেটমারির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ৩২২টি খোয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন অপরাধে ৭৫২ জনকে অপরাধমূলক কাজের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।