দক্ষিণ ২৪ পরগনা: গোটা একদিন কাটলেও শান্ত হচ্ছে না ভাঙড়। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে গোটা এলাকা। সেখানেই আক্রান্ত হন TV9 বাংলার সাংবাদিক। ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা।
আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ, আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে ধর্মীয় সভায় যাওয়ার সময়ে আচমকাই লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সভায় যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আইএসএফ কর্মীদের আরও অভিযোগ, ইচ্ছে করে সভায় যেতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তারাই পুলিশ সেজে মারধর করছে বলে অভিযোগ।
এক আইএসএফ কর্মীর কথায়, “আমরা এই রাজ্যে থেকে কি নিজেদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে পারব না? আমাদের যদি মনে হয় আমরা ভাইজানের সভায় যাব, আমরা যেতে পারব না! কেন আমাদের যেতে দেওয়া হবে না! ইচ্ছে করে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ আমাাদের উপর হামলা করছে। লাঠিপেটা করছে।”
অন্য আরেক কর্মী সমর্থক বলেন, “কাইজার আহমেদ গোটা ভাঙড় জুড়ে সন্ত্রাস জারি করেছে। আমাদের সভা ভণ্ডুল করার চক্রান্ত চলছে। আমরা এটা মেনে নেব না। ইচ্ছে করে আমাদের আটকানো হচ্ছে।”
ঘটনাস্থলে, খবর করতে গিয়ে এদিকে আক্রান্ত হলেন TV9 বাংলার সাংবাদিক। আইএসএফ কর্মীদের বিক্ষোবরত ছবি তুলতে গিয়ে ক্যামেরা ভাঙচুর ও সাংবাদিককে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করেন একাধিক আইএসএফ কর্মী। TV9-র সাংবাাদিক বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়েই ঘটনাস্থল থেকে সরে আসেন ওই সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিক। তাঁদের উপর চলে ইটবৃষ্টিও। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী।
সূত্রের খবর, ভাঙড়ের পদ্মপুকুর মাঠে একটি ধর্মীয়সভা করতে গিয়েছিলেন আইএসএফ চেয়ারপার্সন আব্বাস সিদ্দিকী। কিন্তু, পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে ওই সভা করার কোনও অনুমতি ছিল না। পুলিশের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতিতে সভা করতে হলে যথাযথ কোভিডবিধি মেনে অনুমতি-সহ সভা করতে হবে। কিন্তু, তা না থাকলে সভা করা যাবে না। এই নিয়ে রীতিমতো রবিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। ভোজেরহাটে আটকে দেওয়া হয় আব্বাস সিদ্দিকীর গাড়িও বলে অভিযোগ। যদিও, তৃণমূলের পক্ষ থেকে কাইজার আহমেদ জানান, তিনি এমন কোনও কিছুই জানেন না।
অশান্তির শুরু শনিবার থেকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড়ের বড়ালী পদ্মপুকুর এলাকায় সুন্নাতুল জামাতের কর্ণধার তথা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির একটি ধর্মীয় সভা করার কথা ছিল। অভিযোগ, সেই ধর্মীয় সভা ভেস্তে দিতেই তৃণমূল আব্বাস অনুগামীদের হুমকি দিতে থাকে। আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল বেধে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জামা গিয়েছে।
আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা ওই এলাকায় আব্বাস অনুগামীদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে। আসাদুল মোল্লা নামে এক আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্মীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। শনিবার রাত পর্যন্ত এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। দ্রুত হাসাপাতালে যান ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
আরও পড়ুন: Bomb Blast: জমিতে গোবর সার দিতে গিয়েছিলেন কৃষক, আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা!