দক্ষিণ ২৪ পরগনা: তৃণমূল জমানায় ভাঙড় মানেই আরাবুল, কাইজারের আলাদা আলাদা গোষ্ঠী। তাদের মধ্যে আকচাআকচির খবরও আকছার শোনা যায়। রাজনীতিতে সতীর্থ হলেও তাঁদের সম্পর্ক যে খুব একটা বন্ধুত্বপূর্ণ নয়, বলেন ভাঙড়ের মানুষই। পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আবারও শিরোনামে উঠে আসছে এই নেতাদের দলাদলির খবর। বাড়ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্ভাবনা। সম্প্রতি এক প্রকাশ্য সমাবেশ থেকে কড়া ভাষায় তোপ দাগেন কাইজার আহমেদ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ভাঙড়-২ ব্লকের ৫০ শতাংশ পঞ্চায়েত সদস্যই দুর্নীতিগ্রস্ত! সামনের পঞ্চায়েত ভোটে তাঁদের বাদ দিতে হবে। প্রকাশ্যে এভাবে দলীয় নেতাদের নিয়ে কাইজারের মন্তব্য স্বভাবতই অস্বস্তিতে ফেলেছে দলকে।
সম্প্রতি স্থানীয় কারবালা ময়দানে একটি কর্মিসভা ছিল ভাঙড় বিধানসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের। সেখানে আরাবুল ইসলাম বা তাঁর ঘনিষ্ঠরা উপস্থিত হননি। মূলত আরাবুল বিরোধী বলে পরিচিত আব্দুর রহিম, কাইজার আহমেদ, মিজানুর আলম, মহসিন গাজি ও তাঁদের অনুগামীদের নিয়ে এই কর্মিসভা করেন রেজাউল করিম। সেখানেই ভাঙড়-১ ব্লকের তিনটি অঞ্চলের সভাপতি কাইজার আহমেদ বলেন, “ভাঙড়-২ ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতের ৫০ শতাংশ সদস্য, প্রধানরা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁরা ১০০ দিনের প্রকল্প, আবাস যোজনা, আমপানের টাকা আত্মসাৎ করেছে। সন্ধ্যা হলেই নিউটাউনে যান তাঁরা। আর সাধারণ মানুষের টাকায় আমোদ প্রমোদ করেন।”
কাইজারের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পরই ভাঙড়-২ ব্লকের নেতা আরাবুল ইসলামের অনুগামীরা পাল্টা হাতিয়ার করেছে সোশাল মিডিয়াকে। সেখানে কাইজারের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক দুর্নীতির অভিযোগকে তুলে ধরছেন তাঁরা। সাউথ সিটি প্রকল্পে টাকা চাওয়ার অভিযোগ থেকে বিধানসভা ভোটের আগে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে কাইজারের গোপন আলাপের অভিযোগ সমস্তটা প্রসঙ্গই টেনে তুলছেন আরাবুলের লোকজন বলে সূত্রের দাবি।
আরাবুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ভাঙড়-২ ব্লকে কোনও সভাপতি নেই। দল সেটা না করে বাইরের একটা লোককে (রেজাউল করিম) চেয়ারম্যান করে দিল। সেই লোক বিশেষ একটা গোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে ওঠাবসা করছেন। ভাঙড়ের সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করছেন।” এদিকে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতাদের এই বাকযুদ্ধকে তাড়িয়ে উপভোগ করছে বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিজেপি নেতা সুনীপ দাসেদের বক্তব্য, ভাঙড়ে তৃণমূল নেতারা যে কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত, এই ধরনের কথা তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।