বীরভূম: একুশের নির্বাচনকে (West Bengal Assembly Election 2021) কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে শাসক শিবির (TMC)। সেই তালিকায় একদিকে যেমন বাদ পড়েছে একাধিক হেভিওয়েট নেতার নাম, তেমনই যুক্ত হয়েছে অনেক নতুন মুখ। এর জেরে ইতিমধ্যেই ‘দলবদলু’ হয়েছেন একাধিক নেতা-নেত্রীও। এ বার বীরভূমেও (Birbhum) প্রার্থী নিয়ে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দ্বন্দ্ব মেটাতে অবশেষে বুধবার বৈঠকের ডাক দিলেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)।
বীরভূমের দুটি কেন্দ্রে তৃণমলের (TMC) প্রার্থী তালিকা বদল হয়েছে। দুবরাজপুরের (Dubrajpur) বিধায়ক নরেশ চন্দ্র বাউড়ির পরিবর্তে এ বার প্রার্থী করা হয়েছে খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভানেত্রী অসীমা ধীবরকে। অন্যদিকে, টিকিট না পেয়ে দল ছেড়েছেন বিদায়ী বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে পুরসভার পুরপ্রধান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং-কে। এই দুই পরিবর্তন নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূল (TMC) জেলা নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, দুবরাজপুরের প্রার্থী অসীমা ধীবরকে মানতে নারাজ জেলা নেতৃত্বের একাংশ। ফলে, অসীমার হয়ে কোনও রকম প্রচারেই অংশগ্রহণ করছেন না তাঁরা। এমনকী হচ্ছে না দেওয়াল লিখনও। প্রার্থী অসীমা নিজে একটি দেওয়াল লিখন করেছিলেন কিন্তু সেটি ছাড়া আর কোথাও লেখা হয়নি অসীমার নাম। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে প্রার্থী বদলের লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বিধায়কের মারধরের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দলেরই প্রধান’, ভোট আবহে বেআব্রু তৃণমূলের সংগঠন
যদিও এ প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি বিদায়ী বিধায়ক নরেশ চন্দ্র বাউড়ি। উল্লেখ্য, গত জানুয়রিতে নির্বাচন উপলক্ষে জনসংযোগ বাড়াতে গিয়ে সিউড়িতে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক। পাঁচ বছর পর বিধায়ককে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসীরা। অন্যদিকে, অসীমা জানিয়েছেন, দল কাকে প্রার্থী করল তা বড় কথা নয়, কাজ করাই বড় কথা। প্রার্থী নয়, মুখ্যমন্ত্রীই (Mamata Banerjee) প্রধান। তাঁর কথা ভেবেই প্রচারে নামতে হবে। এরকম পরিস্থিতিতেই কি প্রার্থী বদলের সিদ্ধান্ত নিল ঘাসফুল শিবির?
এ প্রসঙ্গে, অনুব্রতবাবু জানান, দলের সমস্যা দলই মেটাবে। প্রার্থী বদলের প্রসঙ্গটি ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) জানানো হয়েছে। এই নিয়ে বুধবার কর্মীদের নিয়ে বৈঠকও করা হবে। তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়ে দেন জেলা সভাপতি।
অন্যদিকে, নলহাটির বিদায়ী বিধায়ক মইনুদ্দিন সামসের পরিবর্তে প্রার্থী করা হয়েছে রাজেন্দ্র সিং প্রসাদকে। যার জেরেই দল ছেড়েছেন মইনুদ্দিন। ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘আমি কোনওদিন বালিমাফিয়া, কয়লা মাফিয়া, পাথর মাফিয়াদের সঙ্গে আপস করিনি। সব থেকে বড় অপরাধ, আমি মুসলমান। আমি টুপি পরি। এই আমার সব থেকে বড় অপরাধ। আমাকে টুপি পরতে বারণ করেছিল।’ যদিও, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন অনুব্রত (Anubrata Mondal)।
প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরের ক্ষোভের কথা অস্বীকার করেননি বীরভূম জেলার সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্য়ায়। তবে, প্রার্থী বদল আদৌ হবে কিনা দলই সেই চৃড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: ভোট আবহেই শিলিগুড়়িতে ধাক্কা সিপিএমের!