মালে: চিনের সঙ্গে ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে মলদ্বীপ। আর চিনের সঙ্গে গা ঘেষাঘেষি করলে যা হয়, তাই হতে চলেছে মহম্মদ মুইজ্জুর দেশেরও। এর আগে বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, চিনের সহায়তা নিয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে গিয়েছে বিভিন্ন দেশ। এবার মলদ্বীপকেও ‘ঋণ সংকটের’ প্রবল ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ।
গত নভেম্বরে মলদ্বীপের নয়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মহম্মদ মুইজ্জু। তিনি চরম ভারত-বিরোধী এবং চিনপন্থী হিসেবে পরিচিত। তাঁর উত্থানের পর থেকে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে আরও তহবিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেজিং। গত মাসে চিন সফরে গিয়েছিলেন মুইজ্জু। মলদ্বীপের উন্নয়নে তহবিল প্রদানে ‘নিঃস্বার্থ সহায়তার’ জন্য বেজিংকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। আর এরপরই ঋণের ঝুঁকি নিয়ে মলদ্বীপকে সতর্ক করল আইএমএফ।
ঠিক কত টাকার বৈদেশিক ঋণের ফাঁদে পড়েছে মলদ্বীপ, তার বিশদ জানায়নি আইএমএফ। তবে তারা মহম্মদ মুইজ্জুর দেশকে “জরুরি ভিত্তিতে নীতি পরিবর্তন”-এর নির্দেশ দিয়েছে। মলদ্বীপের অর্থনীতি পর্যালোচনা করে আইএমএফ বলেছে, “আর্থিক নীতিতে কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না করা হলে, সামগ্রিকভাবে রাজস্ব ঘাটতি এবং সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে। মলদ্বীপের উপর বৈদেশিক ঋণ এবং সামগ্রিকভাবে ঋণের সংকট নেমে আসার গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে।”
মালদ্বীপের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে পর্যটনে নির্ভরশীল। কোভিড মহামারির সময় পর্যটন শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছিল মলদ্বীপের অর্থনীতিতেও। এখন অবশ্য তারা মহামারির প্রভাব মুক্ত, অর্থনৈতিক দিক থেকেও অনেকটাই আগের জায়গায় ফিরেছে।পর্যটন শিল্পের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, আরও নতুন হোটেল তৈরির মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তারা। কিন্তু, এর মধ্যে আবার ভারতের সঙ্গে মন কষাকষির জেরে, বহু ভারতীয় পর্যটক হারিয়েছে তারা। আইএমএফ-এর মতে, মলদ্বীপ সরকারের আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গিয়েছে। আর্থিক ঝুঁকির পরিমাণ আগের থেকে আরও বেড়েছে।
অনেকে বলছেন, মহম্মদ মুইজ্জু তাঁর মেন্টর তথা মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিনের পথে চলেই মলদ্বীপকে ডোবাতে বসেছেন। আবদুল্লা ইয়ামিনও ছিলেন চিনপন্থী। তাঁর সময়ে বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য চিনের কাছ থেকে প্রচুর ঋণ নিয়েছিল মলদ্বীপ। বিশ্বব্যাঙ্কের মতে, এর ফলে, ২০২১ সালেই চিনের কাছে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি বৈদেশিক ঋণ ছিল মালদ্বীপের। যা ছিল তাদের বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৪২ শতাংশ। এখন সেই ঋণের পরিমাণ আরও বেড়েছে। ঋণের বোঝা আরও বাড়িয়ে চলেছেন প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু।