চাংচুন: করোনার ভাইরাসের দাপট গোটা বিশ্বে এখন অনেকটাই কম। চলতি বছরের শুরুতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণের গ্রাফ অনেকটাই উর্ধ্বমুখী ছিল। তবে এখন সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য চিকিৎসক সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিল করোনা সংক্রমণ কমলেও ভাইরাসের পুরোপুরি বিদায়ের সময় এখনও আসেনি। যে কোনও সময়ে আবারও নতুন রূপ নিয়ে ফিরে আসতে পারে করোনা। সেই আশঙ্কা আরও জোরাল হল চিনের এক সিদ্ধান্তে। এতদিনে সকলে জেনেই গিয়েছেন চিনের উহান থেকেই প্রথম এই ভাইরাসের আবির্ভাব হয়েছিল। বেজিংয়ের এক সিদ্ধান্তে নতুন করে আশঙ্কার আরও তীব্র হয়েছে। শুক্রবার উত্তরপূর্বের চিনা শহর চাংচুনের ৯০ লক্ষ মানুষকে হঠাৎ করেই লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে করোনা ভাইরাসের আগমনের পর থেকেই বর্তমানে এই শহরে সংক্রমণের সংখ্যা সর্বোচ্চ। তাই করোনা সংক্রমণের ওপর রাশ টানতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চাংচুন জিলিন প্রদেশের রাজধানী। এছাড়াও এই শহর শিল্পতালুকের কারণে চিনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসনের তরফে বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক বাড়ি কোনও একজন বাসিন্দা প্রতি দু’দিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য বাড়ির বাইরে বেরতে পারবেন। অত্যন্ত সংক্রমণ ওমিক্রনের চিনা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে। ২০২০ সাল থেকে করোনার আবির্ভাবের পর থেকে এই প্রথম আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছুঁয়েছে। তিন সপ্তাহ আগেই এই সংখ্যা ১০০-র কম ছিল।
চিনের ‘জ়িরো কোভিড’ নীতির ওপর জনগণের বিরক্তি ক্রমেই বাড়ছিল। সেই কারণেই বিভিন্ন শহরে একসঙ্গে বিস্তৃত লকডাউন করার থেকে চিনা প্রশাসন সরে এসেছে। কঠোর কোভিড নীতির ফলে অনেক বিচিত্র ছবি সামনে এসেছিল। সাংহাইতে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে ৪৮ ঘণ্টা অথবা শপিং মল ও রেস্তোরাঁর কর্মীরা দ্বিতীয়বার পরীক্ষা না হওয়া অবধি সেখানে আটক ছিলেন। এই সমস্ত ছবি অনলাইনে সামনে আসার পর বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছিল চিন সরকার। শুক্রবার পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের ১২ টির ও বেশি প্রদেশ থেক ১ হাজার ৩৬৯ জন সংক্রমিতের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। এখন চিনের এই কঠোর করোনা নীতির আদৌ কতটা যুক্তি রয়েছে সেটা সময় বলবে।