ইসলামাবাদ: হাতে চাঁদ পেয়েছে পাকিস্তান। ডুবন্ত মানুষ যেমন খড়-কুটো আঁকড়ে বাঁচার চেষ্টা করে, তেমনই ডুবন্ত দেশটাও ডুবতে ডুবতে খুঁজে পেয়েছে আস্ত একটা জাহাজ। উঠে পড়লেই হল।তরতরিয়ে এগোবে অর্থনীতির গাড়ি। ভাবছেন ব্যাপারটা কী?
নভেম্বর মাসেই খবর মিলেছিল, বিশ্বের বৃহত্তম সোনার খনির হদিশ পেয়েছে চিন। অতটা না হলেও পাকিস্তানের মাটিতেও মিলেছে প্রায় ৩৩ টন সোনার ভান্ডার। যার বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ পাকিস্তানের রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাক পঞ্জাব প্রদেশে সিন্ধু নদের অববাহিকায় মাটির নীচে বিপুল পরিমাণে সোনা মজুত রয়েছে। পাক পঞ্জাবের প্রাক্তন খনিমন্ত্রী ইব্রাহিম হাসান মুরাদ এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ১২৭টি এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ পাকিস্তান। তাতেই সিন্ধু নদের তীরে সোনার ভান্ডারের খোঁজ মিলেছে।
তবে দেশটার নাম পাকিস্তান তো। এই গল্পে আবার একটা টুইস্টও আছে। পাকিস্তানিরাও পাকিস্তানকে ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারেন না। গত ৫ বছরেই অন্তত ৮ বার পাকিস্তানে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ মেলার খবর ভেসে উঠেছে। কখনও প্রাকৃতিক গ্যাস, কখনও হিলিয়াম, কখনও আবার অন্যান্য খনিজ সম্পদ। তবে, এইসমস্ত খবর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে।
পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ, পলিসি মেকারদের একটা অংশই বলছেন, এসব খবর আইএমএফের ঋণ পাওয়ার জন্য নানা মহল থেকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ঋণ ছাড়া পাকিস্তান বাঁচবে না। আর কোন দেশের স্থায়ী সম্পদ কত, সেটা মেপে দেখে তবে ধার দেয় আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার। তাই, এসব বলে একটা চুপসে যাওয়া বেলুনকে ফুলিয়ে দেখানোর চেষ্টা আর কী।
গত সেপ্টেম্বরেই পাকিস্তানে বিশাল পরিমাণে Liquefied petroleum gas বা এলপিজি মেলার খবর ছড়িয়েছিল। তিন মাসের মধ্যেই সব ভোঁ ভাঁ। ফলে, পাক নাগরিকদেরই একটা অংশ বলছে, সোনা যদি মিলল তবে তা খুঁড়ে তোলার কাজ কবে থেকে শুরু হবে তা তো বলা হচ্ছে না। সোনা যদি থেকেও থাকে তাহলেও সেটা কমার্শিয়াল মাইনিংয়ের উপযোগী কিনা, সে প্রশ্নেরও তো উত্তর নেই।
যদিও, পাকিস্তানে সরকারি প্রশাসনের একটা অংশ স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছে। তারা বলছে যে, সোনা কোষাগার ভরাবে। সরকারের রাজস্ব বাড়বে। তাই দিয়ে ধার মেটানো যাবে। কাজের সুযোগ তৈরি হবে। দেশের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির ছবিটাই বদলে যাবে। মানে, একটা এল ডোরাডো হাতে পেয়ে গেছি আর কী।