Sheikh Hasina and Sheikh Rehana: সবসময় হাসিনার পাশে দেখা যায়, কে এই মহিলা?

Sheikh Hasina and Sheikh Rehana: ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে শেখ রেহানাকে নিয়ে জামার্নি উড়ে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখানে সেই সময় ছিলেন হাসিনার স্বামী এমএ ওয়াজেদ মিঞা। পদার্থবিদ এমএ ওয়াজেদ কর্মসূত্রে সেখানে থাকতেন। হাসিনা ও রেহানাকে ছাড়তে বিমানবন্দরে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের পুরো পরিবার।

Sheikh Hasina and Sheikh Rehana: সবসময় হাসিনার পাশে দেখা যায়, কে এই মহিলা?
শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ রেহানা
Follow Us:
| Updated on: Aug 06, 2024 | 6:42 PM

ঢাকা: বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে রয়েছেন আরও প্রবীণ মহিলা। তাঁর চোখেও জল। কে তিনি? হাসিনার সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক? নেট দুনিয়ায় ওই প্রবীণ মহিলাকে নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।

প্রবীণ ওই মহিলার নাম শেখ রেহানা। বয়স আটষট্টি। সম্পর্কে শেখ হাসিনার বোন। শেখ হাসিনার বেশিরভাগ সরকারি সফরে তাঁর সঙ্গী হন রেহানা। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুন করা হয়, তখন হাসিনা ও রেহানা ইউরোপে ছিলেন। ওইদিন খুন হন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুজিবুর, তাঁর স্ত্রী বেগম ফাজিলাতুন্নেসা। খুন করা হয় হাসিনার তিন ভাই কামাল, জামাল এবং রাসেলকে। ৪৯ বছর পর প্রধানমন্ত্রী পদে পদত্যাগ করে হাসিনা যখন বাংলাদেশ ছাড়ছেন, তখনও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন রেহানা।

আওয়ামী লিগে রেহানার দায়িত্ব-

বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ হলেন রেহানা। হাসিনার বেশিরভাগ সরকারি সফরে তাঁকে দেখা গিয়েছে। তিনি আওয়ামী লিগের অন্যতম নেত্রীও। ২০০৭-০৮ সালে হাসিনা যখন জেলবন্দি ছিলেন, তখন তাঁর হয়ে দলের বৈঠক করতেন রেহানা।

১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ড-

১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে বোন রেহানাকে নিয়ে জামার্নি উড়ে গিয়েছিলেন হাসিনা। সেখানে সেই সময় ছিলেন হাসিনার স্বামী পদার্থবিদ এমএ ওয়াজেদ মিঞা। কর্মসূত্রে সেখানে ছিলেন তিনি। দুই বোনকে ছাড়তে বিমানবন্দরে এসেছিলেন মুজিবুরের পুরো পরিবার। পাঁচ দশক পর এক ইন্টারভিউয়ে হাসিনা বলেছিলেন, “আমার স্বামী বিদেশে থাকতেন। সেজন্য বাবা-মার সঙ্গে থাকতাম। সেইসময় আমাদের পুরো পরিবার একটা বাড়িতে থাকত। আমার বাবা-মা, আমার তিন ভাই এবং দুই ভাইয়ের স্ত্রী।” হাসিনা এবং তাঁর বোন বিদেশে চলে যাওয়ার কিছুদিন পরই ধানমণ্ডিতে নিজের বাড়িতে সপরিবারে খুন হন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের ৬ জন-সহ মোট ৩৬ জনকে খুন করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট। ওই হত্যাকাণ্ডের পর হাসিনা, তাঁর স্বামী ও দুই সন্তান এবং রেহানা ভারতে আশ্রয় নেন।

সপরিবারে শেখ মুজিবুর রহমান (ফোটো সৌজন্য-সময় টিভি)

পরে হাসিনা বলেছিলেন, “ওই হত্যাকাণ্ডের পরই বার্তা পাঠিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। আমাদের আশ্রয় দিতে চেয়ে হাত বাড়িয়ে দেন। সেইসময় আমাদের মনে হয়েছিল, আমরা যদি দিল্লি যেতে পারি, তবে সেখান থেকে আমাদের দেশে যেতে পারব। এবং পরিবারের কতজন এখনও জীবিত রয়েছেন, তা জানতে পারব।”

শেখ রেহানার পরিবার-

১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের কয়েক বছর পর বিয়ে করেন শেখ রেহানা। বাংলাদেশের অ্যাকাডেমিক শফিক আহমেদ সিদ্দিকীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। লন্ডনে তাঁদের বিয়ে হয়। তবে সেই বিয়েতে যেতে পারেননি হাসিনা। জানা গিয়েছে, টাকার সমস্যার জন্য বোনের বিয়েতে যাওয়া হয়নি তাঁর। শেখ রেহানার তিন সন্তান। রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, তুলিপ সিদ্দিক এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপান্তি। এর মধ্যে তুলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি এবং ব্রিটেনের মন্ত্রিসভার সদস্য।

হাসিনার দেশ ছাড়ার সময়ও সঙ্গী রেহানা-

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, আন্দোলনকারীরা যখন গণভবনের দিকে এগিয়ে আসছেন, তখন হাসিনাকে দেশ ছাড়ার অনুরোধ করেন তাঁর উপদেষ্টারা। কিন্তু, অনড় হাসিনা দেশ ছাড়তে চাননি। পরে উপদেষ্টারা রেহানাকে অনুরোধ করেন, যাতে তিনি হাসিনাকে বোঝান। তবে বোনের কথাতেও রাজি হননি বাংলাদেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত হাসিনার পুত্র সাজিব ওয়াজেদ মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। তারপরই দেশ ছাড়তে রাজি হন হাসিনা।

দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় হাসিনার পাশে রেহানা

১৯৭৫ সালের দিদির সঙ্গী হয়ে জার্মানি গিয়েছিলেন রেহানা। ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে পদত্যাগ করে হাসিনা যখন দেশ ছাড়ছেন, তখনও তিনি পাশে। সাতাত্তর বছরের দিদি হাসিনাকে আগলেই আবর্তিত আটষট্টির রেহানার জীবন।