ওয়াশিংটন: প্রেসিডেন্ট পদে বসেছেন, চারদিনও হয়নি। এর মধ্যেই একের পর এক বাউন্সার দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ঘোষণা করেছেন, এবার থেকে আর আমেরিকায় জন্মালেই নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে না। কিছু শর্ত রয়েছে সরকারের, তা পূরণ করলেই নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। এদিকে, ট্রাম্পের ঘোষণায় রাতের ঘুম উড়েছে গর্ভবতী মায়েদের। তাদের সন্তানের ভবিষ্যত যে অনিশ্চিত। শুধু তারাই নন, অনাবাসী যারা দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় সংসার পেতেছেন এবং সেখানেই তাদের সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে, তারাও নাগরিকত্ব নিয়ে চিন্তিত।
মা-বাবা আমেরিকান না হলেও, সন্তান যদি সে দেশের মাটিতে জন্মায়, তবে জন্মসূত্রে সে আমেরিকান নাগরিকত্বই পায়। ১৮৬৮ সালে আমেরিকার সংবিধানে এই সংশোধনী যোগ করা হয়েছিল। ১৫৬ বছর ধরে এই আইন মেনে চলা হচ্ছে। কিন্তু দ্বিতীয়বার মসনদে ফিরেই আমেরিকার নাগরিকত্বের হিসাবটা বদলে ফেলতে চাইছেন ট্রাম্প। তিনি ইতিমধ্যেই এগজিকিউটিভ অর্ডারে সই করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, আমেরিকায় জন্মালেই আর সে দেশের নাগরিকত্ব মিলবে না।
শিশুর নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি শর্ত রেখেছেন, শিশুর মা বা বাবা-দুজনের মধ্যে অন্তত একজনকে আমেরিকান হতে হবে। কিংবা একজনের অন্তত গ্রিন কার্ড থাকতে হবে, তবেই সন্তান জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে।
তাঁর শর্তে আরও বলা হয়েছে, সন্তান আমেরিকায় জন্মালেও যদি তার মা বেআইনিভাবে সে দেশে বসবাস করেন এবং বাবা আমেরিকার নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দা হন, সেক্ষেত্রেও শিশুকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। পর্যটন বা পড়ুয়া ভিসায় থাকা কোনও মহিলাও যদি আমেরিকায় প্রসব করেন, তবে সেক্ষেত্রেও শিশু জন্মগতভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না।
ট্রাম্প প্রশাসন আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নিয়ম কার্যকর করতে চলেছে। অর্থাৎ ২০ ফেব্রুয়ারির পর জন্মানো সকল শিশুর নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে এই শর্ত আরোপিত হবে এবং সেই অনুযায়ীই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
আর যারা আগে জন্মাবে বা জন্মেছে? তাদের জন্য রয়েছে স্বস্তির খবর। ২০ ফেব্রুয়ারির আগে জন্মানো সকল নবজাতকরা জন্মসূত্রে আমেরিকান নাগরিকই হবে। আমেরিকায় বসবাসকারী ভিন দেশের নাগরিকদের সন্তানদের মার্কিন নাগরিকত্বও কেড়ে নেওয়া হবে না।
এদিকে, ট্রাম্পের এই নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২২টি স্টেট মামলা করেছে। আদালত যদি স্থগিতাদেশ দেয়, তবে এই আইন এখনই কার্যকর করতে পারবেন না ট্রাম্প।