‘উনিও তাড়াননি, আমিও ছাড়িনি’, রামনগরের ‘মেগা শো’ থেকে এবার কীসের ইঙ্গিত দিলেন শুভেন্দু?

TV9 বাংলা ডিজিটাল: রামনগরের (Ramnagar) সভাকে ‘মেগা শো’ (Mega Show) ঘোষণা করে রেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সাম্প্রতিককালে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশার প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবে সাংবাদিক তথা গোটা রাজ্য ভেবে বসেছিল, এই সভাতেই হয়তো নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু না, তেমনটা হল না। সভার এক্কেবারে শেষে মঞ্চে বক্তৃতা রাখতে শুরু করলেন […]

'উনিও তাড়াননি, আমিও ছাড়িনি', রামনগরের 'মেগা শো' থেকে এবার কীসের ইঙ্গিত দিলেন শুভেন্দু?
'এখনও দলের সক্রিয় কর্মী', রামনগরের 'মেগা শো' থেকে এবার কীসের ইঙ্গিত দিলেন শুভেন্দু?
Follow Us:
| Updated on: Nov 19, 2020 | 11:50 AM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: রামনগরের (Ramnagar) সভাকে ‘মেগা শো’ (Mega Show) ঘোষণা করে রেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সাম্প্রতিককালে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তৈরি হওয়া ধোঁয়াশার প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবে সাংবাদিক তথা গোটা রাজ্য ভেবে বসেছিল, এই সভাতেই হয়তো নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু না, তেমনটা হল না। সভার এক্কেবারে শেষে মঞ্চে বক্তৃতা রাখতে শুরু করলেন শুভেন্দু। সাংবাদিক থেকে শুরু করে সভায় উপস্থিত প্রত্যেকেই তখন হা-পিত্যেস করে বসে রয়েছেন। মেরেকেটে ১৫ মিনিট! শুভেন্দু অধিকারীর বক্তৃতার সময়সীমা। নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে উচ্চবাক্য করলেন না শুভেন্দু। উল্টে, “আমি এখনও একটি দলের মন্ত্রিসভার সদস্য, একটি দলের কর্মী” কথাগুলি বলে যেন জল্পনা জিইয়ে রাখলেন।

এদিনের সভায় দাঁড়িয়ে বললেন, “শুভেন্দু অধিকারী স্থান, কাল পাত্র, ব্যানার জানেন। এটা মনে রাখতে হবে, আমি এখনও একটা মন্ত্রিসভার সদস্য, একটি দলের সক্রিয় কর্মী। মুখ্যমন্ত্রী এখনও আমাকে দলে রেখেছেন, উনিও তাড়াননি, আমিও ছাড়িনি। রাজনৈতিক কথাবার্তা দলের ভিতরে থেকে, মন্ত্রিসভায় থেকে বলা যায় না। এটা আমার নীতি আদর্শের পরিপন্থী।” তাঁর কথায়, “মতান্তর, বিবাদ, বিচ্ছেদও হয় কিন্তু যতক্ষণ আমি দল ছাড়িনি. অরাজনৈতিক মঞ্চে এসব বলতে পারিনা।”

অর্থাত্ শুভেন্দুর অবস্থান এবারও অধরা থেকে গেল বঙ্গ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে। তাঁকে ঠাওর করতে পারছেন বিজেপি-শাসকশিবিরের পোড় খাওয়া নেতারাও। তবে এদিনের মঞ্চে একটি কথা আরও একবার স্মরণ করালেন শুভেন্দু যে তিনি এখনও একটি দলের ‘সক্রিয় কর্মী’ ও ‘মন্ত্রিসভার সদস্য’। যদিও শেষ কয়েক মাসে তাঁকে কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেই সে ভাবে যোগ দিতে দেখা যায়নি কিংবা দলের কর্মসূচিতে ‘নেত্রীর’ জ্বয়গানও করতে শোনা যায়নি।

বরং নন্দীগ্রামের সভায় বলা তাঁর কথা- “ভোটের আগে আসছেন। ভোটের পরেও তো আসতে হবে!’’ যেন দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা রাজ্যে। যে নন্দীগ্রামের মাটি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান, সেই মাটিতেই তাঁর আন্দোলনের প্রধান সৈনিক কটাক্ষের সুরে কথা বলেন।

তবে কি শুভেন্দু বিজেপি? গাঢ় হয় জল্পনা। বিজেপি নেতারাও ‘দরজা খুলে’ বসে থাকেন। এরই মধ্যে অধিকারী পরিবারের শাসকশিবিরে ভোট স্ট্র্যাটেজিস্টের আকস্মিক আগমন। অধিকারী বাড়িতে প্রশান্ত কিশোর কাটান দেড় ঘণ্টা। সেই আলোচনায় অবশ্য ছিলেন না শুভেন্দু, পিকে-র কথা হয়েছিল শিশির অধিকারীর সঙ্গে। কিন্তু তারপরেরই সভায় আচমকা শুভেন্দু কথায় উঠে আসে ‘দলনেত্রী’ শব্দটি। এরপর এদিনের তাঁর ‘মেগা শো’। শুভেন্দু প্রকাশ্যে জানালেন তিনি এখনও একটি দলের সক্রিয় কর্মী।

কিছুটা কাকতালীয়ভাবেই তাঁর ‘মেগা শো’র ২৪ ঘণ্টা আগেই তৃণমূলের মুখপাত্র তথা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বললেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী আমাদের দলের বড় নেতা। তিনি দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটির সদস্য। আমাদের মন্ত্রিসভারও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য…’’ এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যেন ‘একে একে দুই’ এর হিসাব মেলাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার নেই চিনের, তিব্বতের পাশে দাঁড়িয়ে সুর চড়াল আমেরিকা

তবে এবার শুভেন্দুর এই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ অবস্থানে কিছুটা হলেও বিরক্ত একমহল। শাসক-বিরোধী শিবিরের অনেক নেতাই বলছেন, এবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিতে পারেন শুভেন্দু। আদৌ তিনি কী চাইছেন! শুভেন্দু অবশ্য বলে দিয়েছেন, তিনি তাঁর অবস্থান আগামীদিনে কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করবেন।