পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার নেই চিনের, তিব্বতের পাশে দাঁড়িয়ে সুর চড়াল আমেরিকা

যুব প্রজন্মকে নতুন তিব্বত তৈরির স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের মন জয় করে নিতে চায় চিনের কমিউনিস্ট পার্টি।

পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার নেই চিনের, তিব্বতের পাশে দাঁড়িয়ে সুর চড়াল আমেরিকা
দলাই লামা। ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Nov 19, 2020 | 12:53 PM

TV9 বাংলা ডিজিটাল: ১৯৫৯ সালের ঘটনা, লাল ফৌজের হাত থেকে বাঁচতে চিন অধিকৃত তিব্বত থেকে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন চতুর্দশ দলাই লামা (Dalai Lama)। তারপর কেটে গিয়েছে ৬১ বছর। দলাই লামার বয়স এখন ৮৫। পরবর্তী দলাই লামা স্থির করতে মুখিয়ে আছে বেজিং। কিন্তু বেজিংয়ের ঠিক করে দেওয়া দলাই লামাকে মেনে নেবে না তিব্বত। এবার এই বিষয়ে সোচ্চার হল আমেরিকা। আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতিনিধি স্যামুয়েল ডি ব্রাউনব্যাক জানালেন, চিনের কোনও অধিকারই নেই পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার। তা সম্পূর্ণ তিব্বতবাসীদের আওতায়। ব্রাউনব্যাক বলেন, “আমি ধর্মশালায় গিয়ে তিব্বত সম্প্রদায়ের মানুষদের বলে এসেছি চিনের পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবে আমেরিকা।”

স্যামুয়েল জানান, বিগত একশো বছরের বেশি সময় ধরে তিব্বতের মানুষ বেছে নিয়েছে তাদের ধর্মীয় নেতাকে। এখন সেখানে চিনা হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি যদি পরবর্তী দলাই লামা নির্বাচন করতে চায় তারও তীব্র বিরোধিতা করবেন স্যামুয়েল। ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়েও চিনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায় তিব্বতিদের বিশ্বাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে কখনওই সন্ত্রাস মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাই চিনকে ধর্মীয় অত্যআচার বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্যামুয়েল। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উইঘুর মুসলমান, তিব্বতের বুদ্ধ কিংবা খ্রিস্ট ধর্মালম্বী কোনও সম্প্রদায়ের উপরই আঘাত মেনে নেবেন না তিনি।

তিব্বত দখল করার পর চিন কোনও দিন তিব্বতকে ভাষা ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা দেয়নি। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুললে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয় বেজিং। শেষ পর্যন্ত ছদ্মবেশে দু’দিন দু’রাত হেঁটে হিমালয় টপকে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন দলাই লামা। ২০১৯ সালে এক সংবাদ সংস্থাকে একথা জানিয়ে ছিলেন তিনি। তখন দলাই লামা এ-ও জানিয়ে ছিলেন যে পরবর্তী দলাই লামা হবে ভারত থেকেই। বেজিংয়ের স্থির করা কোনও দলাই লামাকে মেনে নেবে না তিব্বতিরা। তিব্বত থেকে ছুটে আসা দলাই লামা ও তাঁর অনুগামীদের ধর্মশালায় থাকার ব্যবস্থা করেছিল ভারত। সেই থেকে ভারতেই রয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: বাণিজ্যে বাইডেন কি ট্রাম্পেরই অন্য রূপ? ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা বিশেষজ্ঞ মহলে

Dalai Lama

আমেরিকায় দলাই লামা। ফাইল চিত্র

তবে অন্য ফন্দি এঁটেছে বেজিংয়ও। তিব্বতিদের পরবর্তী প্রজন্মে ‘চিন প্রেম’ তৈরির বার্তা আগেই দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তখনই তিব্বতি ছাত্রদের পাঠ্যসূচির মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে চিন প্রেমের রশদ। সেখানকার যুব প্রজন্মকে নতুন তিব্বত তৈরির স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের মন জয় করে নিতে চায় চিনের কমিউনিস্ট পার্টি। যার মাধ্যমে পরবর্তী দলাই লামা নির্বাচনের অধিকার তৎসহ তিব্বতিদের সমর্থনও ছিনিয়ে নিতে চাইছে বেজিং।