পাইপ আছে, জল কোথায়?
তবে অনেকেই বলছেন, যে অভিযোগ বিরোধীদের তোলার কথা, তা অনেকটাই আগেভাগে তুলে দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের অস্ত্র কেড়ে নিচ্ছেন! এই যেমন ধরুন, নিজের হাতে থাকা পুলিশের ভূমিকার বারবার বিষোদগার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সরকারি জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে! ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে জালিয়াতি হচ্ছে। জমির চরিত্র বদলে দেওয়া হচ্ছে! যুক্ত হয়ে পড়ছেন আধিকারিক থেকে কর্মীরা। অভিযোগগুলি কার? সবার আগে যিনি অভিযোগ করছেন, তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। কার্যত ডবল রোল তাঁর! তিনিই শাসক, তিনিই আবার বিরোধী। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজ নিয়ে তাঁর যে উষ্মাপ্রকাশ, সেখানে যে কাজ হয়, তার একটা অংশ আসে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে। মানে জল জীবন মিশন।
যে প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাড়ি বাড়ি নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়া। এই প্রকল্পে মোট খরচের ফিফটি-ফিফটি ভাগ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। হরিয়ানা, পাঞ্জাব, গোয়া, কর্নাটকের মতো বেশ কিছু রাজ্য এই প্রকল্পে কিন্তু, ১০০ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের তথ্য বলছে, এক্ষেত্রে ঢের পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ! মাত্র ৫৪ শতাংশ বাড়িতে পৌঁছেছে পাইপবাহিত জল। সূত্রের খবর, আগামী বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারলে টাকা ফেরত চলে যাবে!
পিএইচই-র পারফরম্যান্স নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমতো কাঁটাছেড়া করলেও, আইএসএফ বলছে, এযে ভাবের ঘরে চুরি! জল জীবন মিশনের গতিপ্রকৃতি নিয়ে বারবার ক্ষোভপ্রকাশ, কর্মীদের দোষারোপ, তাঁদের একাংশের ভূমিকায় বিরক্তি। এবং কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জলের মতো জমি নিয়েও তা গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ। এবং সেখানেও মুখ্যমন্ত্রীই অভিযোগকারী। ভোটার তালিকায় মৃতদের নাম ঢোকানোর অভিযোগ তুলে ক্ষোভপ্রকাশ। এসব শুনে বিরোধী দলনেতা তো বলছেন, ভোটার তালিকায় মৃত ভোটারদের নাম ঢোকায় তৃণমূলই! সিপিএমের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্রয়ে ভোটের তালিকায় জালিয়াতি চলছে। নিজের দফতরের দিকে আঙুল তুলেছেন খোদ ভূমি ও ভূমি রাজস্ব মন্ত্রী। আইএসএফ বিধায়কের তোপ, দ্বিচারিতা করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে অনেকেই বলছেন, যে অভিযোগ বিরোধীদের তোলার কথা, তা অনেকটাই আগেভাগে তুলে দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের অস্ত্র কেড়ে নিচ্ছেন! এই যেমন ধরুন, নিজের হাতে থাকা পুলিশের ভূমিকার বারবার বিষোদগার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে কী বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দিনের পর দিন একজনেরই শাসক-বিরোধী ডবল রোলের ভূমিকা। তিনিই দোষ দিচ্ছেন। তিনিই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। কিন্তু, যাঁদের দোষ ধরার কথা, তাঁরাই যেন ময়দানে থেকেও নেই! দলের রাশ তো নিয়েছেনই এবার প্রশাসনের সব কোনায় নিজের প্রভাব বুঝিয়ে দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চিত্রনাট্য কি ছাব্বিশের ভোটের কথা মাথায় রেখে!