
একাধিক সেক্টরের মতো ভারত আত্মনির্ভর হয়েছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেই। বর্তমানে তেজসের মতো যুদ্ধবিমান সেই আত্মনির্ভরতারই প্রতীক। আর তেজস ছাড়াও ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রতীক হটে উঠতে চলেছে ভারতের আসন্ন পঙচম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান AMCA বা ‘অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট’। আর এই স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রেই শুধু হ্যাল বা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের উপর একক নির্ভরতা থেকে সরে আসছে কেন্দ্র।
এই AMCA প্রকল্পের তাৎপর্য ভারতের জন্য বিরাট। ডিআরডিও বা ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের অধীনে অ্যারোনটিক্যাল ডিজাইন করছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোট ৭টি স্কোয়াড্রন বা ১২৬টি যুদ্ধবিমান তৈরি করতে চলেছে হ্যাল। আর এর প্রোটোটাইপ তৈরি করতেই খরচ ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর পুরো প্রজেক্ট শেষ করতে খরচ হবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হল হ্যাল বা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের যে একটা একক কন্ট্রোল ছিল, সেটা আগামীতে হয়তো আর থাকবে না। সরকার এই প্রথম টাটা, লারসন অ্যান্ড টুব্রো ও আদানি গোষ্ঠীর মতো একাধিক বেসরকারি সংস্থাকে এই প্রকল্পে সামিল করেছে। লক্ষ্য একটাই—উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা নিয়ে আসা ও সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের ইতিহাসে নয়া এক অধ্যায়ের সূচনা।
চ্যালেঞ্জও এই ক্ষেত্রে কম নয়। বিপুল অর্থ জোগাড় করাই এখানে বিরাট চ্যালেঞ্জ। কারণ, একদিকে বায়ু সেনার রাফালের মতো বিমান প্রয়োজন। আবার দেশের মাটিতে AMCA তৈরির স্বপ্ন। আর এই দুইয়ের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখাই বায়ুসেনা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মূল লক্ষ্য।
সব মিলিয়ে AMCA প্রকল্প শুধু যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা নয়। এটি ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি ও শিল্প পরিকাঠামোর এক পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় যেন পাশ করলে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান থেকে বাস্তব হয়ে উঠবে।