
দেশের ডিজিটাল পরিচয় পত্র অর্থাৎ আধার কার্ড এবার প্রবেশ করতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে। ভারতের প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরোর একটি ডকুমেন্ট বলছে, গত শুক্রবার অর্থাৎ অক্টোবর মাসের শেষ দিন দেশের ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি বা UIDAI ঘোষণা করেছে, তারা নতুন ‘আধার ভিশন ২০৩২’ ফ্রেমওয়ার্কের কাজ শুরু করেছে।
কী এই আধার ফ্রেমওয়ার্ক? কেন এমন সিদ্ধান্ত? আসলে, প্রযুক্তি এখনকার দিনের থেকে অনেক দ্রুত বদলাচ্ছে। আর আমাদের ডিজিটাল পরিচয় পত্র আধারকে আগামী এক দশকের জন্য ‘ফিউচার-রেডি’ রাখতে এই স্ট্র্যাটেজিক ও টেকনোলজিক্যাল পর্যালোচনা জরুরি ছিল।
একদিকে যেমন সাইবার সুরক্ষার চিন্তা, অন্যদিকে তেমনই ডেটা সুরক্ষা নিয়ে নতুন আইন বা DPDP Act অনুযায়ী আধারকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আর সেই কারণেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Intelligence, ব্লকচেন ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে যুক্ত করে আধার পরিষেবাগুলির মান আরও বাড়ানোই মূল লক্ষ্য।
কিছুদিন আগেই বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। প্রথমে দেশের নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আধারকে পরিচয় পত্র হিসেবে মানতে অস্বীকার করে। আর সেই কারণেই বহু মানুষের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে আধারকে নথিপত্রের তালিকায় যুক্ত করা হয়। এই ঘটনা বুঝিয়ে দিয়েছে, আধারকে আরও শক্তিশালী ও সকলের কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন কতটা।
১২ ডিজিটের আধার নম্বর যুক্ত এই কার্ড আজ শুধু একটি সাধারণ পরিচয় পত্র নয়। বর্তমানে এই আধার কার্ড রেশন কার্ড পাওয়া থেকে মোবাইল সিম নেওয়া, ব্যাঙ্কের লোন বা ইনকাম-ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল, সবকিছুতেই প্রয়োজন। ট্রেনের তৎকাল টিকিট কাটার ক্ষেত্রেও আধার-লিঙ্কড অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৪২ কোটি ৭০ লক্ষ আধার নম্বর তৈরি হয়েছে আমাদের দেশে।
আধার এনরোলমেন্ট বা আপডেট করার জন্য আপনি অনলাইনে UIDAI-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে খুব সহজে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারেন। ওয়েবসাইট থেকে ‘Book an Appointment’ বিভাগে গিয়ে আপনার সুবিধা মতো আপডেট করার জায়গা বেছে নিতে হবে। নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, এমনকি বায়োমেট্রিক তথ্য (ছবি, আঙুলের ছাপ) পরিবর্তনের জন্যেও আপনি এই পথে আধার সেবা কেন্দ্রে স্লট বুক করতে পারবেন।
ভিশন ২০৩২-এর মাধ্যমে আধারকে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির মূল ভিত্তি করে তুলতে চাইছে কেন্দ্র। সামনের দশকে এই ডিজিটাল পরিচয় পত্র কতটা নিরাপদ ও সর্বজনীন হয়, তার ওপরই নির্ভর করছে লক্ষ লক্ষ মানুষের আগামীর কথা।