অনেকেই হয়তো মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন। আর এই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনেকেই বিনিয়োগের সময় নিজের অজান্তেই বেশ কিছু ভুল করে থাকেন। আর এই ভুলের কারণে সারা জীবনে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বিনিয়োগকারীরা।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ যারা করেন তাঁরা অনেকেই বুঝতে পারেন না কখন মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ হয়ে থাকা টাকা ফান্ড থেকে তুলে নিতে হবে। এই কথা শুনে অনেক বিনিয়োগকারীই হয়তো বলবেন, বিনিয়োগ যে করা হয় তা কি তুলে নেওয়ার জন্য? কিন্তু সাধারণত মানুষ কিছুটা বেশি উপার্জনের জন্য বা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হওয়ার জন্য বা আর্থিক স্বাধীনতার জন্যই বিনিয়োগ করেন।
এক্ষেত্রে বুঝতে হবে, মিউচুয়াল ফান্ড থেকে আসা লাভের অঙ্কই বিনিয়োগকারীর জীবনে আর্থিক স্বচ্ছলতা বা আর্থিক স্বাধীনতা নিয়ে আসতে পারে, টাকা ফান্ডে বিনিয়োগ হয়ে থাকলে বিনিয়োগকারীর জীবনে কোনও রকম স্বচ্ছলতা আসবে না। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে ন্যাভ (NAV) রোজই ওঠানামা করে। কয়েক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ থাকলে বাজারের মাত্র ১ শতাংশ ওঠা বা নামায় লাভ বা ক্ষতির অঙ্ক কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত এদিকওদিক হতে পারে। তবে কেউ যদি ১০/১৫ বছর ধরে মিউচুয়াল ফান্ডে এসআইপির মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন তবে তাঁর ক্ষেত্রে ওই ক্ষতির পরিমাণ সাধারণত তেমন বেশি হয় না। তাই প্রথমেই বুঝতে হবে মিউচুয়াল ফান্ডে থাকা অর্থ কখন তুলে নিতে হবে।
অনেকেই মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন এজেন্ট বা দালালদের মাধ্যমে। তাঁরা যা বলেন, অনেক বিনিয়োগকারীই সে সমস্ত কথা বেদ বাক্যের মতো মেনে নেন। কিন্তু এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, কোনও বিনিয়োগই অতীতের রিটার্ন দেখে করা উচিৎ না। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে আলফা, বিটার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় থাকে যা না জেনে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা বেশ ঝুঁকি সাপেক্ষ।
যাঁরা বিনিয়োগ করেন তাঁদের অনেকেই অনেক সময় খেয়াল করেন না তাঁরা তাঁদের লভ্যাংশের কত অংশ মিউচুয়াল ফান্ড ম্যানেজারকে বা তাঁর এজেন্টকে ফি হিসাবে দিচ্ছেন। কোনও নিয়মিত বিনিয়োগকারী যদি এই বিষয়ে খেয়াল রেখে বিনিয়োগ না করে থাকেন, তাহলে তিনি অনেক বড় ভুল করছেন।
বিনিয়োগকারী হিসাবে এই তিন ভুল করে থাকলে সেই ভুল শুধরে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রথমত, ফান্ড তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাজারের অবস্থা দেখে তারপরই সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। দ্বিতীয়ত, যে এজেন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করছেন তাঁর কাছেই সেই মিউচুয়াল ফান্ডের আলফা, বিটা, বিনিয়োগের ঝুঁকি ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে নিন। তিনি এই বিষয়ে তথ্য দিতে না পারলে অনলাইনে এই বিষয়ে খোঁজ খবর করতেও পারেন। তৃতীয়ত, লভ্যাংশের কত অংশ ফান্ড ম্যানেজার বা এজেন্টকে দিতে হবে, তা বিনিয়োগের আগেই বিনিয়োগকারীর স্পষ্ট ভাবে জেনে নেওয়া উচিৎ।
কোথায় বিনিয়োগ করলে সব থেকে বেশি লাভ হবে, জানেন? পড়ে দেখুন
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। বিনিয়োগ করার আগে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি অবশ্যই ভাল ভাবে পড়ে নেবেন। উল্লেখ্য, এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র পাঠককে শেয়ার বাজার সম্পর্কে অবগত করার জন্য পরিবেশ করা হয়েছে।