নয়া দিল্লি: ক্ষমতায় ফিরলেই বাংলার মানুষকে দুর্নীতির টাকা ফিরিয়ে দেবেন। বুধবার (২৭ মার্চ), বড় প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা কৃষ্ণনগরের রাজমাতা, অমৃতা রায়কে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজমাতাকে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, ক্ষমতায় ফিরলে প্রথমেই তিনি বাংলার মানুষকে দুর্নীতির টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আইনি বিকল্পগুলির খোঁজ করবেন। এতদিন পর্যন্ত আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে। এই টাকা বাংলার মানুষের হাতে কীভাবে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তারই আইনি উপায় খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতায় ফিরলে, আইনি উপায়েই বাংলার মানুষকে সেই ৩০০০ কোটি টাকা ফিরিয়ে দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বিরাট আশ্বাস, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে বিজেপির প্রচারের রাজনৈতিক আখ্যানি বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি একটা অত্যন্ত বড় অভিযোগ। বিজেপির রাজনৈতিক আক্রমণের প্রায় পুরোটা জুড়েই রয়েছে এই দুর্নীতির অভিযোগ। ইডি-সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি, নিয়োগ, আবাস যোজনা, রেশনের মতো বিভিন্ন দুর্নীতর অভিযোগে একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের অনেকেও অভিযোগ করেছেন, নিয়োগ পেতে বা অন্য কোনও পরিষেবা বা সুযোগ সুবিধা পেতে তাঁরা বিভিন্ন সময়ে, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও সেই পরিষেবা বা সুবিধা তাঁরা পাননি বলে অভিযোগ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আজ খোদ প্রধানমন্ত্রী বাংলার মানুষকে সেই দুর্নীতির অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করছেন, বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নির্বাচনের আগে প্রচারের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী তথা সন্দেশখালীর প্রতিবাদী মহিলাদের মুখ রেখা পাত্রকে। এদিন ফোন করলেন কৃষ্ণনগরের প্রার্থী অমৃত রায়কে। দুটি জায়গার সঙ্গেই দুর্নীতির অভিযোগ জড়িয়ে রয়েছে। সন্দেশখালীতে তো তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সন্দেশখালীর ঘটনার সূত্রপাতই হয়েছিল, রেশন দুর্নীতির তদন্তে শাহজাহানের বাড়িতে ইডির হানা দেওয়াকে কেন্দ্র করে। অন্যদিকে, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। তাঁর বিরুদ্ধেও ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল। লোকসভার এথিক্স কমিটির সুপারিশ মেনে মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছিল।