কলকাতা: প্রত্যেকবারই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাজপথে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবারের আবহটা অনেকটাই আলাদা। এই মুহূর্তে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী তিনি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ৫০ জন মহিলাকে প্রার্থী করেছেন। সেই তালিকায় পোড় খাওয়া রাজনীতিকদের পাশাপাশি রয়েছেন একাধিক তারকা। আর তাঁদের নিয়েই নারী দিবসের মিছিলে সামিল হলেন তৃণমূল নেত্রী। প্রত্যাশিত ভাবেই নারী দিবসকে উপলক্ষ্য করে গেরুয়া শিবিরকে এক হাত নিলেন তিনি। মোদী-অমিত শাহদের আক্রমণ করেই গুজরাটের ধর্ষণের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি।
সোমবার কলেজ স্ট্রিট থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিলে সামিল হলেন মমতা। রাস্তায় এ দিন মমতার পাশে প্রত্যাশিত ভাবেই দেখা গেল তারকার ভিড়। মিছিলে হাঁটলেন সায়নী, লাভলি, সায়ন্তিকা, জুন মালিয়ার মতো অভিনেত্রীরা, যাঁদের এ বার প্রার্থী তালিকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে। রয়েছেন শ্রীতমা, মানালির মতো সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া অভিনেত্রীরাও।
ডোরিনা ক্রসিং-এ মঞ্চে পৌঁছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নারী দিবসের অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে প্রধামন্ত্রীকে মিথ্যাবাদী বলে শান দেন আক্রমণে। বাংলায় নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে বিজেপি বার বার যা প্রশ্ন তোলে, এ দিন তার কড়া জবাব দেন মমতা। গুজরাটের ধর্ষণের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলার মেয়েরা রাত ১২টাতেও ঘুরে বেড়াতে পারে। আইসিডিএস-আশা কর্মী হিসেবেও মেয়েরা কাজ করেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পরিসংখ্যানও তুলে ধরে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, গুজরাট সরকারের হিসেব বলছে, দু বছরে ৩০৯৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ৪৮২৯টি অপহরণের ঘটনা, ১৮৫৩টি খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, ধর্ষণের শীর্ষে আমেদাবাদ ও মোদীবাবুর পেয়ারের রাজ্য উত্তর প্রদেশ। পশ্চিমবঙ্গে নারী সুরক্ষায় কি কি করা হয়েছে সে সব হিসেবও দেন তিনি। নারী সুরক্ষার প্রসঙ্গ ধরেই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়েও এ দিন সরব হন তিনি। এমনকি নারী দিবসের সেই ম়ঞ্চ থেকে খেলা হবে স্লোগানও শোনা যায় তাঁর মুখে।
আরও পড়ুন: নাম ঘোষণার পরও ‘দলত্যাগ’! বিজেপিতে যাচ্ছেন হবিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী?
তবে মমতার সঙ্গে তারকা প্রার্থী তথা তৃণমূলি তারকাদের উপস্থিতি এ দিন ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিলেন সুদেষ্ণা রায়। অভ্য়স্ত গলায় না হলেও জুন মালিয়া, আমরা শুধু দিদিকে চাই বলে যে ভাবে স্লোগান দিলেন তাতে জুনেপ পিঠ চাপড়ে দিলেন ম়ঞ্চে উপস্থিত তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বক্তব্য রাখলেন লাভলি মৈত্রও। তাঁর মুখে শোনা গেল বাংলা নিজের মেয়েকে চায়। তাই নারী দিবসে যে আনকোরা প্রার্থীদের কার্যত রাজনীতির একটা পাঠও হয়ে গেল, তা স্পষ্ট।