বাংলা ধারাবাহিক হোক অথবা বড় পর্দা– অপরাজিতা আঢ্য মানেই ভাল অভিনয়ের সমাহার। অপরাজিতার জীবনে বারেবারেই এসেছে তাঁর মায়ের প্রসঙ্গ। অকপটে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তাঁর ডাকাবুকো মায়ের কথা। জানিয়েছেন, মায়ের সাহসের কথা। এমনই এক ঘটনার কথা সম্প্রতি তিনি শেয়ার করেছেন, যা শুনলে গায়ের রক্ত জল হয়ে যেতে পারে আপনার। অপরাজিতা জানিয়েছেন, সে সময় ১৯৭৭ সাল, নকশাল আমল। তাঁর তখনও জন্ম হয়নি। মা ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁর সঙ্গেই এমন এক ঘটনা ঘটে যায় যা ভাবনারও অতীত।
অপরাজিতার কথায়, “সালটা ১৯৭৭। আমি ৭৮-এ জন্মেছি। তার আগের কথা। তখনও নকশালদের দাপট কমেনি। মা একদিন স্কুলে যাচ্ছে। উল্টো দিক থেকে এক ভদ্রলোক বাজার করে আসছিলেন। তখন সকাল সাড়ে ছয়টা বাজে। বাবা মা’কে এগিয়ে দিতে গেটের সামনে গিয়েছে। উনি বলছেন, “বৌদি, কী চললেন স্কুলে”? মা সবে উত্তর দিল, ‘হ্যাঁ দাদা’। আচমকাই পিছন থেকে কেউ একজন ভোজালি নিয়ে এসে তাঁর মুন্ডুতে কোপ বসাল। মুন্ডুটা ছিটকে এসে মায়ের শাড়িতে পড়ল। ওই অবস্থাতেই মা স্কুলে চলে গেলেন। আমার বাবা ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। আর সারাজীবনের নার্ভের পেশেন্ট হয়ে গেলেন। সারাটা জীবনের জন্য।” একা হাতেই দুই ছেলে মেয়েকে বড় করেছেন অপরাজিতা মা। তিনি আজ নেই। তবে তিনি যে কী সাহসী, স্বাধীনচেতা এক নারী ছিলেন তা অতীতেও বারেবারে বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, অসম্ভব শক্ত মনের মানুষ ছিলেন অভিনেত্রীর মা।
অপরাজিতার নিজের জন্মও খুব একটা সাধারণ ভাবে হয়নি। সাত মাসেই এসে গিয়েছিলেন তিনি। তিন মাস থাকতে হয় হাসপাতালে। বাঁচার আশা ছিল না। সেই কারণেই মেয়ের নাম অপরাজিতা রাখেন তাঁর পরিবার। জীবনযুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন যিনি, তিনি যে সব যুদ্ধই জয় করবেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল তাঁর পরিবার।