ফুলশয্যায় গৌরীদেবীকে কোন উপহার দিয়েছিলেন উত্তম?

উত্তম কুমারের ভাই তরুণ কুমার তো দাদার বিয়ের জন্য একেবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিলেন। বন্ধুর বাবার থেকে বিদেশি গাড়ি ভাড়া থেকে বৌভাতে বন্ধুদের নিয়ে খাবার পরিবেশন। সব দায়িত্বই হেসেখেলে নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

ফুলশয্যায় গৌরীদেবীকে কোন উপহার দিয়েছিলেন উত্তম?
Uttam Kumar

|

Dec 01, 2025 | 12:51 PM

উত্তম কুমার, মহানায়ক হয়ে ওঠার আগেই মা-বাবার কথায় বিয়েটা সেরে ফেলেছিলেন। গৌরীদেবীকে তাঁর মা-ই পছন্দ করেছিলেন পুত্রবধূ তবে উত্তমের বিয়ের আসরের জাঁকজমকে কোনও ঘাটতি হতে দেননি তাঁর আত্মীয় পরিজনরা। উত্তম কুমারের ভাই তরুণ কুমার তো দাদার বিয়ের জন্য একেবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিলেন। বন্ধুর বাবার থেকে বিদেশি গাড়ি ভাড়া থেকে বৌভাতে বন্ধুদের নিয়ে খাবার পরিবেশন। সব দায়িত্বই হেসেখেলে নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তরুণ কুমারের লেখা আমার দাদা উত্তম কুমার বইতে মহানায়কের বিয়ের নানা কীর্তিই লিখেছিলেন তিনি। যার মধ্য়ে আলাদা করে উত্তমের ফুলশয্যার রাতের একটি গোপন তথ্য ফাঁস করেছিলেন তরুণ কুমার। যা নাকি খোদ গৌরী দেবী তাঁকে জানিয়েছিলেন।

গৌরীদেবীর সঙ্গে তরুণ কুমারের প্রথম থেকেই স্নেহের ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আর সেই কারণেই গৌরীদেবী তরুণ কুমারকে মাঝে মধ্যেই নিজের জীবনের নানা কথা শেয়ার করতেন। কথায় কথায়, তরুণ কুমারকেই জানিয়ে ছিলেন ফুলশয্যা রাতে গৌরীদেবীকে দেওয়া বিশেষ উপহারের কথা।

যে ঘর উত্তম ও গৌরীদেবীর ফুলশয্যার জন্য সাজানো হয়েছিল। সেই ঘরেই ট্রাঙ্কের পিছনে লুকিয়ে বসেছিলেন উত্তমের বউদি ও তাঁর এক তুতো বোন। সেটা অবশ্য টের পেয়েছিলেন উত্তমের স্ত্রী গৌরীদেবী। উত্তম ঘরে ঢুকতেই ইশারায়, সে কথা জানিয়ে ছিলেন গৌরীদেবী। তারপরই ট্রাঙ্কের কাছে গিয়ে উত্তমের অট্টহাসি।  বোন ও বউদিকে ট্রাঙ্কের পিছন থেকে বার করে উত্তম সোজা বলে উঠলেন, ”তোমরা আমার ফুলশয্যা দেখবে তো? বেশ আজ আমি জানলা-দরজা সব খুলে রাখছি। উত্তমের মুখে এমন কথা শোনামাত্রই বউদি আর বোন লজ্জায় লাল হয়ে ঘর থেকে দৌঁড়ে পালালেন। উত্তম যে বরাবরই খুব রসিক মানুষ ছিলেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এই ঘটনার মধ্যে দিয়েই। তবে এর পাশাপাশি উত্তম যে স্বামী হিসেবেও কর্তব্যপরায়ণ, তা গৌরীদেবীকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন প্রথম রাতেই।

বিয়ের সময়ই উত্তমের কাছে একটা জিনিস আবদার করেছিলেন গৌরীদেবী। উত্তম সেদিন হ্যাঁ বা না কিছুই জানাননি। গৌরীদেবী ভেবেছিলেন, উত্তম হয়তো তাঁর আবদারটি এড়িয়ে গিয়েছেন। কিন্তু ফুলশয্যার রাতে সমস্ত ভাবনা বদলে গেল গৌরীদেবীর। যেন সারপ্রাইজ পেলেন। ফুলশয্যার বিছানায় বসে, গৌরীদেবীর হাতে উত্তম তুলে দিলেন বানেশ্বর শিব লিঙ্গের একটি রূপো দিয়ে তৈরি “গৌরীপট্ট”। যা কিনা উত্তমের কাছে চেয়েছিলেন গৌরীদেবী। শিব ও এই গৌরীপট্ট সৃষ্টির প্রতীক। নারী-পুরুষের মিলনের রূপক। নিজেদের ভালবাসাকে শিব-পাবর্তীর মতো অমর করে তুলতেই এমন উপহার চেয়েছিলেন গৌরীদেবী।