সত্যজিতের হাজার আবদারেও রবীন্দ্রনাথ সেদিন অটোগ্রাফ দেননি, কিন্তু যা দিয়েছিলেন তা সারাজীবন মনে রেখেছেন মানিকবাবু
রবিঠাকুরের সঙ্গে রায় পরিবারের প্রথম থেকেই সুসম্পর্ক ছিল। একদিন সকাল সকাল রবিঠাকুরের কাছে সত্য়জিৎকে নিয়ে পৌঁছলেন সুপ্রভাদেবী। কিন্তু রবিঠাকুর সামনে আসতেই লজ্জা পেয়েছিলেন সত্যজিৎ।

সময়টা ১৩৩৬ সাল। সত্য়জিৎ রায়ের বয়স তখন মাত্র দশ বছর। সেই সময়ই পৌষমেলায় মা সুপ্রভা দেবীর সঙ্গে শান্তিনিকেতনে পৌঁছেছিলেন সত্য়জিৎ। মনে মনে তাঁর ইচ্ছা ছিল, একটিবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং নতুন কেনা অটোগ্রাফ খাতায় রবিঠাকুরের একটা সই! সত্যজিতের জিদই ছিল, এই অটোগ্রাফের খাতাটির প্রথম পাতায় থাকবে বিশ্ব কবির সই।
রবিঠাকুরের সঙ্গে রায় পরিবারের প্রথম থেকেই সুসম্পর্ক ছিল। একদিন সকাল সকাল রবিঠাকুরের কাছে সত্য়জিৎকে নিয়ে পৌঁছলেন সুপ্রভাদেবী। কিন্তু রবিঠাকুর সামনে আসতেই লজ্জা পেয়েছিলেন সত্যজিৎ। তাই বাধ্য হয়ে সুপ্রভাদেবীই রবিঠাকুরকে বলেন অটোগ্রাফের কথা। খুদে সত্যজিতের দিকে তাকিয়ে রবিঠাকুর বলেছিলেন, খাতা রেখে যাও, কাল এসে নিয়ে যেও।
সেদিন আর সত্যজিতের খাতায় সই করেননি রবীন্দ্রনাথ। একটু মন খারাপ নিয়েই ঘরে ফিরে আসেন সত্যজিৎ। পরের দিন সকালে রবি ঠাকুরের কথা মতো, তাঁর বাড়িতে হাজির হন সত্যজিৎ। তারপরই ঘটে সেই ঘটনা। সত্যজিতের হাতের উপর সেই অটোগ্রাফের খাতাটি রাখতেই চমক। সেই খাতার পাতা উল্টোতেই হতবাক হয়ে যান ছোট্ট মানিক! তিনি ভাবতেই পারেননি, অটোগ্রাফের বদলে রবিঠাকুর এমন একটা সারপ্রাইজ দেবেন তাঁকে। সত্যজিতের অটোগ্রাফের খাতার পাতায় রবি ঠাকুর লিখলেন কবিতা,
এই খবরটিও পড়ুন




‘বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু। দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু।’ (এটি (স্ফুলিঙ্গ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত)
তবে হ্য়াঁ, প্রথমপাতায় এই কবিতা লেখা থাকলেও, পরের দিন আবার ডেকে সেই খাতার পাতায় সই করতেও ভোলেননি বিশ্বকবি। কিন্তু রবিঠাকুরের নিজে হাতে লেখা সেই কবিতা যেন সত্যজিতের কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় ও মহামূল্যবান উপহার ছিল। সারাজীবন সেই খাতাকে আগলে রেখেছিলেনল ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি পরিচালক।





