বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হল ক্যানসার। লক্ষণ, সচেতনতা এবং উপসর্গ এড়িয়ে যাওয়ার কারণেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়ে। প্রতিরোধ এবং উপসর্গ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা আর সঠিক চিকিৎসা—এই দুইয়েরই প্রয়োজন আছে। বাচ্চাদের মধ্যেও ব্যাপক হারে বাড়ছে ক্যানসারের প্রবণতা। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ছোটদের মধ্যে লিউকোমিয়া, মস্তিষ্কের ক্যানসার, লিম্ফোমাস, টিউমার, নিউরোব্লাস্টোমা—এই জাতীয় ক্যানসারের প্রবণতা অনেক বেশি। রোগের সঙ্গে আমাদের লড়াই করতে হবে। তবে একেবারে ছোটদের চোখের সামনে কষ্ট পেতে দেখা, লড়াই করতে দেখা খুবই কঠিন। রোগ নির্ণয় আর চিকিৎসার জন্য শরীরে যে রকম মারাত্মক ব্যথা-বেদনা হয়, তা সহ্য করা সত্যিই কষ্টের।
আজকাল শরীরে সমস্যার শেষ নেই। আর তাই শরীরে কোনও সমস্যা দেখলে ছোট বা তুচ্ছ বলে এড়িয়ে যাবেন না। দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, মাঝেমধ্যেই মাথাব্যথা বা বমি-বমি ভাব, টিউমার, ক্লান্তি—এসব উপসর্গ থাকলে এড়িয়ে না যাওয়াই শ্রেয়। বাচ্চার মধ্যে কোনও রকম সমস্যা হচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে বাড়ির বড়দেরই। এর মধ্যে পাঁচটি লক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ:
দ্রুত অতিরিক্ত ওজন হ্রাস:
রোগা কিংবা মোটা কোনও সমস্যা নয়। তবে বাচ্চার ওজন যদি অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকে, তাহলে কিন্তু সাবধান। অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়ার অর্থ হল শরীরে অভ্যন্তরীণ কোনও সমস্যা হচ্ছে। হয়তো কোনও অঙ্গ ঠিকমতো কাজ করছে না। ওজন কমে যাওয়ার এই বিষয়টি মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করুন। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছেই প্রথমে যান এক্ষেত্রে।
ক্রমাগত মাথা ব্যথা, বমি:
আজকাল অধিকাংশ সময় আমাদের একই জায়গায় বসে-বসেই কেটে যায়। একটানা ল্যাপটপ, মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের উপর খুবই বেশি চাপ পড়ে। এই চোখের ব্যথা থেকেও হতে পারে বমি। যদি বাচ্চারা প্রায়শই বলে যে মাথা ব্যথা করচে, বমি পাচ্ছে অথবা যদি ঘনঘন বমি হতে তাকে, তাহলে একেবারেই অবহেলা করবেন না। ক্যানসারের আরও একটি লক্ষণ হল শরীরে ফোলা ভাব। জয়েন্টগুলো হঠাৎ করে ফুললে, শরীরের কোনও গ্ল্যান্ড ফুললে কিংবা কোথাও টিউমার দেখলে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকের পারামর্শ নিন। পরে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান।
ক্লান্তি:
বাচ্চা কি খুব সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে? সারাদিন অলস ভাব লেগেই থাকছে? তাহলে কিন্তু মোটেই উপেক্ষা নয়। শরীরে কোনও সমস্যা হচ্ছে বলেই এমনটা হচ্ছে। তবে শুধু ক্যানসার নয়, শরীরে বেশ কিছু ভিটামিনের অভাব এবং পুষ্টির ঘাটতি থাকলেও এমন ক্লান্তিভাব ঘিরে ধরে।
বাচ্চাদের মধ্যে সাধারণ যে সব লক্ষণ এড়িয়ে যাবেন না। TV9 বাংলা-র তরফে যোগাযোগ করা হয় চিকিৎসক ও কনসালট্যান্ট অঙ্কোলজিস্ট শঙ্কর নাথ (একদা আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত ও বর্তমানে এশিয়াটিক সোসাইটির মেডিক্যাল সেক্রেটারি)-এর সঙ্গে। যে সব লক্ষণগুলির কথা তিনি বলেছেন, তা হল:
প্রাথমিক সচেতনাতেই রোগ নির্ণয় অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। এ সব লক্ষণ কোনওভাবেইএড়িয়ে যাবেন না। প্রয়োজন মতো রুটিন ব্লাড টেস্ট (CBC), এক্স রে, ইউএসজি এসব করাবেন। বাচ্চার পেট ফোলা থাকলে, হাড় ফুলে থাকলে বা হঠাৎ করে খুঁড়িয়ে হাটলেও অবহেলা নয়। চিকিৎসকের সঙ্গে থমিক পরামর্শ নিয়ে নিন। টিউমার বা অন্য রকম কোনও কিছু দেখলে চিকিৎসক FNAC-এর মতো পরীক্ষার পরামর্শ দেন। যতই কষ্ট হোক, এ সব পরীক্ষা করাতেই হবে।