নয়া দিল্লি: হেপাটাইটিস সি একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ, যা মারাত্মক আকার নিতে পারে। এমন এক রোগ, যা সারাজীবনের জন্য একজন মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ক্যান্সার, সিরোসিস, লিভারের সমস্যা তো বটেই, যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হয়, এই রোগে মৃত্যুর ঝুঁকিও পর্যন্ত থাকতে পারে, সতর্ক করছেন চিকিৎসকরাই। এটি এমন একটা রোগ যা অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতীদের থেকে ভ্রূণ অবস্থায় তাঁর অনাগত শিশুর ক্ষেত্রে সংক্রমিত হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের মধ্যেই এই সংক্রমণ মারাত্মক। সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষ মাসে বা প্রসবের সময় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে, তবে এটা কি প্রতিরোধ করা সম্ভব?
কীভাবে শিশুদের হেপাটাইটিস প্রতিরোধ করবেন?
নিউজ 9 লাইভের সঙ্গে এই নিয়েই আলাপচারিতায়, চিকিৎসক লোকেশ এল.ভি. লিড কনসালটেন্ট গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট, স্পর্শ হাসপাতাল, ইনফ্যান্ট্রি রোড। তিনি অভিভাবকদের জন্য কিছু প্রতিরোধমূলক টিপস শেয়ার করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, যখন এক নবজাতকের হেপাটাইটিস হয়, তখন তারা জন্ডিস, লিভারের সমস্যা-সহ বেশ কিছু রোগের সম্মুখীন হয়। শিশুরা তাদের অপরিণত ইমিউন সিস্টেমের কারণে এমনিতেই দুর্বল থাকে। নবজাতকের হেপাটাইটিসের জন্য স্ক্রিনিং অপরিহার্য, যা সাধারণত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সংক্রমণ শনাক্ত করা হলে, তা দ্রুত চিকিৎসায় সারানো সম্ভব। সঠিক সময়ে রোগ নির্ধারণ ও চিকিৎসা লিভারের গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধ করতে পারে। স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি, গর্ভাবস্থায় হেপাটাইটিস-বি-র টিকা দেওয়ার জন্য মায়েদের পরীক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ। এক্ষেত্রে প্রসূতি কিংবা নবজাতকে অত্যন্ত যত্ন ও ধারাবাহিক চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে।
পাশাপাশি নারায়ণা হেলথ এসআরসিসি চিলড্রেন হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং হেপাটোলজির পরামর্শক চিকিৎসক আদিত্য কুলকার্নিও বেশ কিছু কথা শেয়ার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হেপাটাইটিস হল লিভারের ভাইরাল সংক্রমণ। শিশুদের মধ্যেই গুরুতর সমস্যা করতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে লিভারের কার্যক্ষমতা বিকাশের ব্যর্থতা। শিশুদের ক্ষেত্রেই এই রোগের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। স্কুলে বা অন্য কোথাও বাচ্চারা বেশি মেলামেশা করে থাকে, তাই তাদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি । ফলে তাদের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত, দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন।
হেপাটাইটিস সি-এর লক্ষণগুলো কী কী?
চিকিৎসকরা বলছেন, হেপাটাইটিস সি-তে আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই সংক্রমণের প্রথম ছয় মাসে কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। উপসর্গ হল
১. বমি বমি ভাব
২. বমি করা
৩. পেটে ব্যথা
৪. গাঢ় প্রস্রাব
৫. মাটির রঙের মল
৬. ক্লান্তি ভাব
৭. জন্ডিস
৮. খিদে কমে যাওয়া
৯. জ্বর
১০. জয়েন্টে ব্যথা
এই বিষয়গুলো লক্ষ্য করলেই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেজ্ঞরা।