ফের দেশে করোনার আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সংখ্য়ক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন, তার মধ্য়ে প্রায় ৮০ শতাংশই ওমিক্রনের উপসর্গযুক্ত। অন্যদিকে এইমসের চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এই ভাইরাসের উপসর্গগুলি মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। তাতে আগের সংক্রমণের থেকে তিনগুণ বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গের মতো মারাত্মক ক্ষতিকর নয়। ফলে ওমিক্রনের আক্রান্ত হলে বাড়িতেই নিজের যত্ন নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। গুরুতর কিছু হলে তখন হাসপাতালে ভরতি করার প্রস্তুতি নিতে হবে।
নিউজট্র্যাকলাইভ পোর্টালে একটি প্রতিবেদনে,এইমসের মেডিসিন বিভাগের অতিরিক্ত প্রফেসর ড. নীরজ নিশ্চল জানিয়েছেন, বর্তমানে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বলা ভাল হাইজাম্প দিয়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের সংক্রামিত হওয়ার পর উপসর্গ দেখা যাচ্ছে মাত্র তিনদিন পর। তবে ডেল্টায় আক্রান্ত যাঁরা হয়েছিলেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সংক্রমনের পর চারদিন পর শরীরের মধ্য়ে উপসর্গ দেখা গিয়েছিল। আর সেই প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল দ্বিতীয় তরঙ্গের সময়কালে। অন্যদিকে সংক্রমণের পাঁচদিন পর আলফা ভেরিয়েন্টের উপসর্গ চোখে পড়তে দেখা যাচ্ছে। তবে অন্যান্য ভেরিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন দ্রুততার সঙ্গে মানুষকে সংক্রামিত করছে।
মৃদু ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে বাড়িতে কীভাবে চিকিত্সা করাবেন
– সবসময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করুন। চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করুন।
– স্বাস্থ্যের উন্নতি ও অবনতি, যাই হোক না কেন ডাক্তারকে সবচাই জানান। স্বাস্থ্যের অবনতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন ও হাসপাতালে যান।
– করোনা ছাড়াও অন্যান্য রোগের ওষুধ খাবেন কিনা সে ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কখন হাসপাতালে যাবেন
– অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট হলে
– স্বাভাবিকের তুলনায় অক্সিজেনের লেবেল নীচে নেমে গেলে অর্থাত্ ৯৪ এর কম হলে
– বুকে ক্রমাগত ব্যাথা ও ভারীবোধ করলে
– মাথা ঠিক করে কাজ না করলে অবশ্যই বাড়ির লোকদের বা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। তিন থেকে চারদিন পরও যদি উপসর্গগুলি বৃদ্ধি পায়, তাহলে অবশ্যই হাসপাতালে ভরতি হওয়া প্রয়োজন।
বাড়িতে ওমিক্রনের চিকিত্সা কীভাবে করবেন
ড. নীরজ নিশ্চলের কথায়, ওমিক্রনে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী সাধারণ চিকিত্সাতেই সেরে উঠতে পারবেন। তা বাড়িতেই সম্ভব।
– প্রাপ্তবয়স্কদের যদি জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে প্যারাসিচামল ৬৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট খেয়ে নিতে পারেন।
– বেশ কিছুদিন ধরে যদি জ্বর থাকে, তাহলে নন-স্টেরয়েড ড্রাগ নেপ্রোজ্সেন ২৫০ মিলিগ্রাম খেতে পারেন। তবে তার আগে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
– ঠান্ডা লাগার উপসর্গ দেখা দিলে রোগী সাট্রিজিন ১০ মিলিগ্রাম বা লেভোসেট্রিজিন খেতে পারেন। তবে কী খাবেন তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
– কাশি হলে কাফ সিরাপ খেতে পারেন। তবে কতমাত্রার কী সিরাপ খাবেন, তা আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: Omicron In India: “হাসপাতালে ভরতির রেট কমলেও ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনা কিন্তু উদ্বেগজনক!”