Omicron In India: “হাসপাতালে ভরতির রেট কমলেও ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনা কিন্তু উদ্বেগজনক!”

প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়কাল পেরিয়ে মানুষ আরও ভীত ও আতঙ্কিত। মৃত্যুসংখ্যা না বাড়লেও, আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন সুপার জাম্প দিয়ে বেড়ে চলেছে। আর সেখানেই চিকিত্‍সকবিজ্ঞানীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

Omicron In India: “হাসপাতালে ভরতির রেট কমলেও ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ঘটনা কিন্তু উদ্বেগজনক!''
ডঃ সৌম্য স্বামীনাথন (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 08, 2022 | 8:37 PM

করোনার তৃতীয় ঢেউ বললে ভুল হবে। আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সুনামির কথা উল্লেখ করে করোনার ভয়াবহতা জানিয়েছিল। সেই আশঙ্কাই সত্যি করে বর্তমানে ওমিক্রনের সুনামিতে গোটা দেশ তোলপাড় হয়ে চলেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়কাল পেরিয়ে মানুষ আরও ভীত ও আতঙ্কিত। মৃত্যুসংখ্যা না বাড়লেও, আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন সুপার জাম্প দিয়ে বেড়ে চলেছে। আর সেখানেই চিকিত্‍সক বিজ্ঞানীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। ভাইরাসকে রুখতে ইতোমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। নাইট কারফিউ বা জরিমানার বিষয়য়টি এখন অনেক ফিকে হয়ে গিয়েছে। কারণ করোনা রুখতে গেলে এই দুটি বিষয়ে জোড় না দিয়ে মূল বিষয়ের উপর দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে কিনা তা আগে দেখা দরকার। আর সেই মূল বিষয় কী? জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা। ইনডোর সেটিংসে মিটিং এড়িয়ে যাওয়া ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন কিনা। সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অকপট ডাঃ সৌম্য স্বামীনাথন। নিউজ নাইনকে দেওয়া মহামূল্যবান সাক্ষাত্‍কারটি এখানে তুলে ধরা হল…

ভারতে ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের জন্য এটি এখনও প্রাথমিক অবস্থা কিন্তু আমরা এখনও পর্যন্ত যা জানি, এই রূপটি তেমন গুরুতর নয়। এমনটা কি ধরে নেওয়া নিরাপদ হবে?

– এই নয়া ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে আমরা কিছু জিনিস জানি। প্রথমত, কিছু ল্যাবে গবেষেণায় দেখা গিয়েছে, এটি ফুসফুসের চেয়ে আপার রেসিরেটরি ট্র্যাক্টে আঘাত হানছে। গিনিপিগের মত প্রাণী যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত, সেইসব প্রাণীদের রক্তের কালচার করা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এই ভাইরাসটি নিউমোনিয়া হওয়ার প্রবণতা কমায়। আপার রেসপিরেটরি ইনফেকশন হিসেবে থাকার প্রবণতা বেশি বলে মনে করা হয়।

দ্বিতীয়ত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওমিক্রন যে দেশে প্রভাব চালিয়ে যাচ্ছে সেখানকার গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এটি অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য। ডেল্টার চেয়ে তিন বা চারগুণ বেশি। কিন্তু হাসপাতালে ভরতির প্রয়োজনীয়তা ডেল্টার তুলনায় প্রায় এক চতুর্থাংশ বলে মনে করা হচ্ছে। অন্তত দক্ষিণ আফ্রিকা সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। তাই মনে করা যেতে পারে ওমিক্রনে আমাদের আরও বেশি আক্রান্তের সংখ্যার মাত্রা থাকবে, যেগুলির মধ্যে মৃদু ও কম মাত্রার গুরুতর হবে। অবস্থা শোচনীয় হলে মৃত্যু হতে পারে। তবে অনুপাতের দিক থেকে সেই সংখ্যা বেশ কম। যাঁদের অবস্থা গুরুতর বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ছাড়া গতি নেই, তাঁদের গুরুত্ব সহকারে যত্নের প্রয়োজন।

অন্য আরও একটি জিনিস হল দক্ষিণ আফ্রিকা একটি জিনিস খুঁজে পেয়েছে। তা হল হাসপাতালে ভরতি হওয়া রোগীদের মধ্যে ডেল্টা ও বিটার তরঙ্গের থএকে তুলনামূলকভাবে ভাল অবস্থা ছিল। ওমিক্রনের সঙ্গে আরও বেশি মানুষ পুনরুদ্ধার হয়েছে। কম মারা গিয়েছে। আপনি যদি আগের কিছু ভেরিয়েন্টের সঙ্গে ওমিক্রন তুলনা করেন, তবে এর কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

তুলনামূলকভাবে যদি তীব্রতা অনেক কম বলে মনে করা হয়, তাহলে আপনি কি হালকা এবং উপসর্গবিহীন রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়িতে থেকে চিকিত্‍সা করানোর পরামর্শ দেবেন?

– ওমিক্রনের প্রধান সমস্যা হল, এটি খুব দ্রুততার সঙ্গে সংক্রমণ করার ক্ষমতা রয়েছে। কারণ ভাইরাসগুলি এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে অল্প সংখ্যক রোগী যারা খুব অসুস্থ হতে পারে, তারাও একটি বড় সংখ্যক মানুষের মধ্য়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে। ধরা যায়, ডেল্টা তরঙ্গের সময় ২০ শতাংশ মানুষের গুরুতর যত্নের প্রয়োজনের তুলনায় ৪-৫ শতাংশ মানুষের হাসপাতালে ভরতির প্রয়োজন। কিন্তু ডেল্টায় ভারতে দিনে সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ কেস ছিল, এই নয়া স্ট্রেনটির সঙ্গে আপনি প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন মানুষের মধ্যে দেখতে পাবেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যে দিনে ১০ লক্ষ আক্রান্তের রেকর্ড রয়েছে। এমন অনেক দেশে দেখা যাচ্ছে যে সংখ্যার পরিমাণটি আগে কখনও দেখেননি কেউ। তাই এটি ঠিক যে হাসপাতালগপিলতে বহুসংখ্যক রোগী ভরতি হতে পারে, আইসিইউগুলিতেও ভরতি হতে পারে। আর তাতেই আতঙ্ক তৈরি হতে পারে। এটি কেবল গুরুতর রোগীদের জন্য নয়, একটি বড় সংখ্যক মানুষের যত্নের প্রয়োজন। তাঁদের পর্যবেক্ষেনে রাখা ও সঠিক সময়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ডাক্তারের প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে আমি মৃদু উপসর্গহীন মানুষের জন্য ১০-১২টি ওষুধের প্রেসক্রিপশন দেখতে শুরু করেথিল। এই জিনিসগুলির জন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। রোগীদের যৌক্তিক ব্যবস্থাপনা, কীভাবে তা করা হবে, কারা স্ক্রিনিং করতে যাচ্ছেন, কীভাবে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে, ডাক্তাররা আসলে কী কী পরামর্শ দিচ্ছেন, তা সবই পর্যবেক্ষনে রাখতে হবে। ভারতে ভাল টেলি-হেলথ ও টেলি-মেডিসিন সিস্টেম রয়েছে, যার ফলে রোগীদের জন্য পর্যবেক্ষনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

মূলত মানুষদের এটা বুঝতে হবে বিপদের লক্ষণগুলি কী কী। কেউ খুব অসুস্থ হওয়ার আগে তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা প্রয়োজন। লক্ষণগুলি মৃদু বা উপসর্গহীন থাকলেও আপনি সবাইকে হাসপাতালে ভরতি করতে পারবেন না, কারণ সেই সংখ্যাটিই বেশি হচ্ছে।

আমরা যেহেতু সংখ্যার বিষয়ে কথা বলছি, তাই এই সংখ্যাটি কতটা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে তা ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব হবে?

-এর সঠিক সংখ্যা ভবিষ্যদ্বাণী করা অসম্ভব। প্রবণতা অনুসারে, আমরা জানি যে ভারতে কিছু শহরে ওমিক্রনের প্রভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, উল্টোদিকে কিছু কিছু জায়গায় আবার ডেল্টার প্রভাব এখনও সক্রিয় রয়েছে। আমাদের কাছে সরকারির কোনও তথ্য নেই। তার কারণ হল সেখানে পর্য়াপ্ত পরিমাণে সিকোয়েন্সিং রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

ড, বিনোদ পল জানিয়েছিলেন যে প্রতিদিন প্রায় ১.২ মিলিয়ন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে। মার্কিন দেশের পরিসংখ্যান থেকে তাদের জনসংখ্য়া ও কেসের সংখ্যা বিবেচনা করে একটি ডেটা এক্সট্রাপোলেট করছেন। কিন্তু আমি এই সংখ্যা কতটা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে তা নিয়ে আগামা কোনও বার্তা দিতে পারব না। এটি পরীক্ষার উপর নির্ভর করে। এই মুহূর্তে আপনি যে সংখ্যাগুলি দেখছেন, তা আসলে সংখ্যা নয়। এটা শুধু আইসবার্গের চূড়া মাত্র। মূল সংখ্যা জানার জন্য অনেক কিছু পরীক্ষার উপর নির্ভর করে । আর সেই পরীক্ষার হার সংখ্যা অনুযায়ী বাড়ানো হয়নি।

আমরা একটি প্রিক্যশন ডোজ-সহ ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ও ইমিউনোকম্প্রোমাইজড রোগীদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে কিন্তু ভ্যাকসিন ককটেল বেছে নেওয়া হচ্ছে না। কোন ভ্যাকসিন কি বুস্টার হিসেবে প্রভাব ফেলবে?

-আমি মনে করি যে কোনও ভ্য়াকসিনের তৃতীয় ডোজ অমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করবে। কারণ তাদের সবার একই প্রোটিন অ্যান্টিজেন, স্পাইক প্রোটিন রয়েছে। এটি ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করবে, আরও অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হবে।

আমাদের সমস্যা হল, আমাদের কাছে কোভ্যাক্সিনের কোনও তথ্য নেই। কোভ্য়াক্সিনের প্রাথমিক ডোজ কোভ্য়াক্সিনের পর, আমাদের কাছে কোনও ডেটা উপলব্ধ নেই। কোভিশিল্ডের প্রাথমিক ডোজ পরে কোভিশিল্ডই দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের সঙ্গে কী আশা করতে পারি সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি। কোভ্যাক্সিনের সঙ্গে এটি প্রিক্যশন ডোজ হিসেবে কীভাবে আচরণ করবে সে সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই।

পাইপলাইনে নাসাল ভ্যাকসিন রয়েছে, ভারতে বায়োটেকের ইন্ট্রানাসাল ভ্যাকসিন একটি গেম চেঞ্জার হবে, এই বিষয়ে আপনি কী বলবেন?

– ইন্ট্রানাসাল ভ্যাকসিন এই বিশেষ রূপের বিরুদ্ধে কাজ করবে কিন্তা আমরা তা জানি না। শুধুমাত্র ক্লিনিকাল ট্রায়াল দেখাতে পারবে। কারণ প্রতিবারই যখন একটি ক্লিনিকাল ট্রায়াল করা হয় তখন বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট ছড়ি ঘোরাতে থাকে। সেই কারণেই বিভিন্ন ভ্যাকসিনের তথ্য সেই সময়ে কী ধরনের রূপান্তরিত হচ্ছে , তার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। বর্তমানে। বর্তমানে যে সমস্ত ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয় তাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডেল্টা ও ওমিক্রনের কার্যকারিতা ডেটা থাকে। একবার ইন্ট্রানাসাল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষ হলেই বলা যাবে সেটা আদৌও ভালো হবে কিনা।

নাসাল ভ্যাকসিনের থেকে আমরা এটা আশা করি যে নাকের মিউকোসায় স্থানীয় অনাক্রম্যতা আরও মাত্রায় করে। তাই সম্পূর্ণরূপে সংক্রমণ প্রতিরোধে আরও ভাল দিক খুলে যাবে। তবে সেটা আরও পরীক্ষা করে দেখা দরকার। প্রমাণ ছাড়া এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করাও ভুল হবে।

আপনি তখন বলেন যে আমাদের SARS CoV-2-এর সঙ্গেই বাঁচতে শিখতে হবে, এর অর্থ কী?

– একবার আপনি পর্যাপ্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুললে, কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে না। তা আমরা গত দুই বছরে দেখে আসছি। আমরা লক্ষ্য করেছি যে আইসিইউতে থাকা বা প্রাণ হারিয়েছেন এমন প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই টিকা দেওয়া হয়নি। এর মানে ভ্যাকসিনগুলি গুরুতর রোগের বিরুদ্ধে এমনকি বিশুদ্ধ রূপগুলির বিরুদ্ধে খুব ভাল সুরক্ষা প্রদান করছে। এর অর্থ হ’ল আমরা এই ধরণের মৃত্যুর হার বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ব্যাঘাত দেখতে পাব না। তবে আপনি ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে যেমন দেখা যাচ্ছে তেমন কেসই ধরা পড়বে বেশি। আমরা এটা জানি না যে SARS CoV-2 ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো মরসুমি ফ্লুয়ের মত রূপ ধারণ করবে। সারা বছর ধরে বাতাসে ঘুরে বেড়াবে ও এখানে-ওখানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিছু জনসংখ্যার যেখানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, সেখানে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যাবে। SARS CoV-2 অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতো দেখা দেবে। কিন্তু সমস্যা হল যে যতক্ষণ না আমরা সেই বিন্দুতে পৌঁচছি, ততক্ষণ পর্যন্ত নানান বৈচিত্র্যের আবির্ভাব দেখতে পাব।

কিছু বিজ্ঞানী দক্ষিণ আফ্রিকার ওমিক্রন অভিজ্ঞতার সঙ্গে একটি সমান্তরাল রেখা টানছেন। তাঁদের বক্তব্য যেমন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, তেমনি সেই গ্রাফের তীব্র পতন হবে। আপনি কতটা সম্মত ?

– এমনটা ঘটতে পারে। কারণ, প্রাকৃতিক সংক্রমণ বা টিকা দেওয়ার জেরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত, উভয়েরই জনসংখ্যার মধ্যে সেরোপজিটিভিটির উচ্চ হার রয়েছে। সেক্ষেত্রে ভাইরাসটি দ্রুত সংক্রমিত হতে শুরু করেছে। এটি খুব দ্রুত সমস্ত সংবেদনশীল মানুষকে সংক্রামিত করে এবং তারপরে এটি এমন একটি পরিস্থিতিতে চলে যায় যেখানে ভাইরাসটি সংক্রামিত হওয়ার জন্য কোনও সংবেদনশীল লোক অবশিষ্ট থাকে না এবং তারপরে এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। কিন্তু ভারত বিশাল একটি দেশ । আমাদের বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে। সুতরাং, সামগ্রিকভাবে ভারতকে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে তুলনা করা যায় না। রাজ্যের পর রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই রেকর্ড তৈরি করছে। ডেল্টার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এটিও একটি সম্ভাব্য দৃশ্যকল্প।

১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গোটা দেশে সর্বোচ্চ সংখ্য়ায় পৌঁছে যায় তাহলে কি আমরা এটা ধরে নিতে পারি যে মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে এন্ডেমিক হতে পারে?

-এটা বলা খুব কঠিন। কারণ মানুষের ক্রিয়াকলাপের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে যে তরঙ্গ তীব্রভাবে ধেয়ে এসেছিল তাতে মানুষের আচরণের কারণেই ঘটেছিল। তবে সেই তরঙ্গের ভয়াবহতা সামলে উঠতে মানুষের আচরণ ও সচেতনতার পরিবর্তনই বেশি সাহায্য করেছিল। মানুষ আরও দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছে। সরকারও সঠিক সময়ে সঠিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই সমস্ত বিষয়গুলি সংক্রমণের মাত্রা নিম্নগামী করে।

ভারতে অনেক কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিছু রাজ্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং রাতের কারফিউ জারি করেছে। এটা কি সঠিক পদক্ষেপ?

– আমি নিশ্চিত নই। আমি বারবার বলেছি যে স্কুলগুলি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। খোলার জন্য প্রথমেই দেখা দরকার ভাইরাসের তীব্রতা। যদি ঝুঁকি বনাম সুবিধার দিকে তাকান তবে সুবিধার চেয়ে স্কুল বন্ধ করার ঝুঁকি বেশি। অবশ্যই, স্কুলে ছড়িয়ে পড়বে, কিন্তু ভয়াবহতা সামলে খুব দ্রুত স্কুল খোলার ঝুঁকি নিতেই হবে। তার কারণ এই স্কুল না খুললে ড্রপ আউটের সংখ্যা বাড়বে ও শিক্ষা থেকে বহু ছাত্রছাত্রী বঞ্চিত হবে।

আপনাকে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যা ভাইরাসটিকে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পেতে বাধা দেয়। আমরা জানি এটি একটি বায়ুবাহিত ভাইরাস, আমরা জানি এটি কোথায় সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। যে যে বিষয়গুলো ফোকাস করা দরকার। সে কারণেই রাতের কারফিউ বা জরিমানা করতে বলা সম্ভবত উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। মূল বিষয় হল আমরা কতটা জনসমাবেশ এড়াতে পারছি, ইনডোর সেটিংয়ে মিটিং এড়াতে পারছি কিনা এবং দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছি কিনা? মাস্কিং খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের কাছে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি তালিকা রয়েছে । আর এই ব্যবস্থা সম্পর্কে অনেকেই এখন অবগত। বিভিন্ন ব্যবস্থার কার্যকারিতা দেখে অনেক পর্যালোচনা করা হয়েছে। অবশ্যই সরকার অর্থনীতিকে উপেক্ষা করতে পারে না। করোনার জেরে ফের সম্পূর্ণ লকডাউনে যেতে পারে না। তবে সংক্রমণ কম রাখার সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে শিখতে হবে।

এটা কি সত্যি যে হু নতুন ভেরিয়েন্টের ভয়াবহতা নিয়ে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন দিচ্ছে। কিছু দিন, এটিকে হালকা বলা হয় এবং অন্য দিকে আমরা ভাইরাসের তীব্রতা নিয়ে সতর্কবার্তার নির্দেশ পাই…

-এ বিষয়ে আমি তা মনে করি না। শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি যে নতুন তথ্য পাওয়া গেলে আমরা আমাদের প্রতিবেদনগুলি আপডেট করতে থাকব। দক্ষিণ আফ্রিকা বা যুক্তরাষ্ট্র্রের কয়েক দিনের সংক্রমণের তথ্যের ভিত্তিতে যে কোনও সিদ্ধান্তে ঝাঁপিয়ে পড়া বোকামি হবে। সুতরাং, আমরা যত বেশি শিখছি আমরা আমাদের রিপোর্টে আপডেট করছি। WHO, প্রথম থেকেই বজায় রেখেছে যে ওমিক্রন হয়ত মৃদু তবে এটি এখনও একই ভাইরাস। তাই এখনও রোগের কারণ হতে পারে, এখনও মৃত্যু ঘটাতে পারে। তাই এটি সাধারণ ঠান্ডার মতো নয় দেখা উচিত নয়। আমি এটা মনে করি যে আমরা সব কিছু একসঙ্গে জুড়ে সামঞ্জস্য রেখে চলেছি।

আরও পড়ুন: Vaccine Cocktail: দেশে কোভ্যাক্সিনের ঘাটতি মেটাতে ভ্যাকসিন ককটেলই বিকল্প বুস্টার! কী বলছেন আইসিএমআরের প্রাক্তন চিফ

আরও পড়ুন:  Omicron in India: প্যানিক নয়,মৃদু ও উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই! জানাচ্ছে আইসিএমআর