Omicron in India: প্যানিক নয়,মৃদু ও উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই! জানাচ্ছে আইসিএমআর

দেশে কি তে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে? আমরা এটিকে তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম যাই বলি না কেন, সবার আগে রাজ্যে নির্দিষ্ট কোভিড তথ্যের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ প্রথম তরঙ্গের সময় দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ সংক্রমণ মোট ১০টি রাজ্যে ব্য়াপকহারে ছড়িয়ে পড়েছিল।

Omicron in India: প্যানিক নয়,মৃদু ও উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই! জানাচ্ছে আইসিএমআর
দেশে কোভিড বাড়তেই ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলিতে। ছবি গুগল ইমেজ থেকে নেওয়া ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 07, 2022 | 1:37 PM

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের এমিডেমিওলজি ও সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ড. সমীরণ পাণ্ডা নিউজ নাইনকে একটি সাক্ষাত্‍কারে জানিয়েছেন, ভারতকে একপেশে আচরণ করা উচিত নয়। উপসর্গহীন রোগীদের হাসপাতালে ভরতি করা ও দখল করে নেওয়া একেবারেই উচিত নয়। হোম আইসোলেশনে কোভিড নির্দেশিকা মেনে রোগী নিজেদের কেয়ার নিতে পারবেন অনায়াসে।

ভাইরাসজনিত ও সংত্রমণযোগ্য হওয়ার মধ্যে রয়েছে পার্থক্য। ওমিক্রন পরবর্তীতে পরিস্থিতিতে এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমরা দুটির মধ্যেই পার্থক্য বুঝতে পারি।  উদাহরণস্বরূপ হিসেবে বলা যেতে পারে, ওমিক্রন হল সার্স কোভিজ ২ ভাইরাসের একটি অত্যন্ত সংক্রমিত নয়া রূপ। তবে বেশিরভাগ রোগীর মধ্যে এই নয়া ভেরিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়লেও একটি পজিটিভ দিক দেখা গিয়েছে, তা হল এই ভাইরাসের প্রভাবে রোগীদের মধ্যে উপসর্গহীন দেখা গিয়েছে। আমাদের কাছে রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে প্রায় ৭০ শতাংশ ওমিক্রন আক্রান্তের মধ্যে উপসর্গবিহীন দেখা গিয়েছে। যার কারণ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি ভয়াবহ হলেও তাতে অসুস্থতার হার অনেক কম। মাত্র ৩০ শতাংশের মধ্যে মৃদু প্রকৃতির কোভিড উপসর্গ রয়েছে।

অন্যদিকে, ডেল্টা ভেরিয়্যান্টও মারাত্মকভাবে প্রবীণদের মধ্যে প্রভাব ফেলা শুরু করেছে। বাদ পড়ছে না শিশুরাও। ভাইরুলেন্স এবং ট্রান্সমিসিবিলিটি এক্ষেত্রে একই অর্থ হয় না। বরং বলা যেতে পারে ওমিক্রন একাধারে প্রকৃতি অনুযায়ী একটি ভাইরাল সংক্রমণ। ডেল্টা বা ওমিক্রন আক্রান্তদের হাসপাতালে ভরতি হওয়াকে মারাত্মক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ উপসর্গ দেখা মাত্রই হাসপাতালে ভরতি হওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। আর তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতেও আমরা সকলেই রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখার চেষ্টা করে চলেছি। তবে এর কোনও বিকল্প পথও কারোর জানা নেই। এমন পরিস্থিতিতে টেস্ট রিপোর্ট না আসা পর্যন্তও কোন রোগী কোন সংক্রমণে ভুগছেন তা পরিস্কার করে বলা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।

এত কিছুর পরেও হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি ও ভেন্টিলেটর ব্যবহার নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবুও যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্তদের ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেনের ব্যবহার করা হচ্ছে না। যাঁরা ইমিউনোসপ্রেসেন্টের অধীনে আছেন তাদের ক্ষেত্রে এই রূপটি গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীর আইসিইউ বেডের প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর তৃতীয় ঢেউকে সামাল দিতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো কিছু বদল আনা হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় ঢেউয়ে লক্ষ্য করা গিয়েছে, ডেল্টার প্রভাব বিস্তার হলেও ৭০ শতাংশের উপসর্গহীন নমুনা পাওয়া গিয়েছে। তবুও কোনওভাবেই ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে না, রোগীদের অত্যন্ত পরিচর্যার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।

আমাদের হাসপাতালগুলিতে দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় যে অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, সেই সমস্যা এবারে আর মুখোমুখি হতে হবে না বলেই মনে করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, উপসর্গহীন ব্যক্তিদের হাসপাতালের বেড দখল করে থাকা নিয়ে অনেক হাসপাতাল থেকেই অভিযোগ আসছে। উপসর্গহীন ওমিক্রন বা মৃদু ডেল্টা সংক্রমণে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। সাধারণ মানুষর মধ্যে যাতে কোভিডের নয়া রূপ নিয়ে যাতে আতঙ্ক তৈরি না হয়, ও বিনাকারণে হাসপাতালে ভরতি হওয়া এড়িয়ে যান, তার জন্য সরকার পক্ষ থেকে একটি প্রচার অভিযান চালাতে পারে। সরকার থেকে একটি নিয়ম বেধে দেওয়াও রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত হলে গুরুতর অবস্থায় না হলে হাসপাতালে ভরতি হওয়া যাবে না। নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন ও দায়িত্ব নিজেদের উপরই নেওয়া প্রয়োজন।

– উপসর্গযুক্ত ও সংক্রামিতের সংস্পর্শে এলে দ্রুত কোভিড টেস্ট করার চেয়ে উপসর্গহীন ব্যক্তিদের উচিত হোম আইসোলেশনে থাকা।

-কোভিড টেস্ট করানোর জন্য হাসপাতালে না গিয়ে স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষকের সঙ্গে কথা বলে পর্যবেক্ষণের জন্য বলতে পারেন।

– যাঁরা আক্রান্ত ও উপসর্গযুক্ত তাঁদের বাড়ির মধ্যে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় নিজেরে শরীরের খেয়াল রাখার কাজ করতে হবে।

– তৃতীয় তরঙ্গের মতো অক্সিজেন স্যাচুরেশন পর্যবেক্ষন ও ৬ ঘণ্টা ব্যবধানে শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা এই অবস্থায় নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রধান ও অন্যতম চাবিকাঠি।

– অক্সিজেনের স্যাচুরেশন কমে গেলে , জ্বর যদি তিনদিনের বেশি সময় ধরে থাকে, শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেছেন, এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই হাসপাতালে চিকিত্‍সার জন্য যান।

-উদ্বেগ না হয়ে সরকারি নির্দেশিকা ও বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য মেনে চললে দ্রুত সুস্থ হওয়ার দিয়ে যেতে পারেন।

দেশে কি তে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে? আমরা এটিকে তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম যাই বলি না কেন, সবার আগে রাজ্যে নির্দিষ্ট কোভিড তথ্যের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ প্রথম তরঙ্গের সময় দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ সংক্রমণ মোট ১০টি রাজ্যে ব্য়াপকহারে ছড়িয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় সেইসব রাজ্যগুলি অন্যান্য রাজ্যের থেকে তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। অন্যদিকে, যে সব রাজ্যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল ও পরবর্তী ক্ষেত্রে টিকা গ্রহণের সংখ্যা না বড়ালে সেইসব রাজ্যগুলিতেও করোনাভাইরাসের প্রভাব তীব্রভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে যে সব জিনিস নিয়ে বেশি উদ্বেগ হওয়ার নয়, সেগুলি নিয়েই বেশি মাথা গামানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। পরিস্থিতি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এমন পরিবেশ তৈরি হতে না দিলে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। জনসমাগমের কারণে নির্দিষ্ট স্থানে জনসংখ্যাকর ঘণত্ব বাড়লে নিঃসন্দেহে ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই যে কোনও মূল্যে গণসমাবেশ এড়িয়ে চলাই বাঞ্ছনীয়। কোভিডের বিস্তার রুখতেই শুধু নয়, চিকিত্‍সার ক্ষেত্রে বাড়তে পারে নয়া রোগ, নয়া ব্যাধি। তাই সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন ও সাবধান করুন।

আরও পড়ুন: Covid-19: ওমিক্রন সাধারণ ফ্লু নয়, একে হালকা ভাবে নেবেন না, পরামর্শ WHO-এর

আরও পড়ুন: Coronavirus: ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও ইদানীং কেন এত মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন? জানুন…