নয়া দিল্লি: ভোট গ্রহণ পদ্ধতিতে আসতে চলেছে আমূল পরিবর্তন। বুধবারই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) সুপারিশ মেনে শীঘ্রই নির্বাচন পদ্ধতি(Electoral Process)-তে বেশ কিছু বড় পরিবর্তন আনা হবে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের তরফে যে বড় পরিবর্তনগুলি করা হবে, তা মূলত ভোটার তালিকাকে আরও শক্তিশালী করা, ভোট গ্রহণ পদ্ধতিকে আরও অন্তর্ভুক্ত করা, নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ভুয়ো ভোট চিহ্নিত করে তা বাদ দেওয়া।
সূত্রের খবর, যেভাবে আধার কার্ড (Aadhar Card) ও প্যান কার্ডের (PAN Card) লিঙ্ক করাতে হয়, একইভাবে আধার কার্ডের সঙ্গে ভোটার আইডি কার্ডের (Voter ID) লিঙ্ক করানো হবে। তবে এক্ষেত্রে, সু্প্রিম কোর্টের গোপনীয়তার অধিকারের নিয়ম মেনে, এটি ব্যক্তির ইচ্ছা অনুযায়ী হবে। অর্থাৎ কেউ যদি ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ না করাতে চান, সেক্ষেত্রে তাকে জোর করা হবে না।
নির্বাচন কমিশনের দাবি, সরকারের তরফে মান্যতা দেওয়ার আগে এটি পাইলট প্রকল্প হিসাবে আনা হয়েছিল, তাতে দারুণ সাফল্য মিলেছে। সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়াও এই নিয়মের সপক্ষেই ছিল। এই নতুন নিয়মে একদিকে যেমন নকল ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড দেখিয়ে ভুয়ো ভোট রোখা যাবে, একইসঙ্গে ভোটার স্লিপের তথ্যও আরও নির্দিষ্ট হবে।
আরও একটি প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ বৃদ্ধি নিয়ে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকেই প্রথমবারের ভোটার যারা, অর্থাৎ যারা ১৮ বছরে পা দিয়েছেন, তারা এবার থেকে বছরে চারবার নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ পাবে। বছরের চারটি সময়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে, ওই সময়ের মধ্যে নতুন ভোটাররা নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এর আগে কেবল বছরে একবারই ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ পাওয়া যেত।
নির্বাচন কমিশনের তরফে সার্ভিস অফিসারদের জন্য আইনকে লিঙ্গ নিরপেক্ষ করারও চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। আগে কেবল পুরুষ সার্ভিস অফিসারদের স্ত্রীদেরই ভোট দেওয়ার অধিকার ছিল, মহিলা সার্ভিস অফিসার হলে, তার স্বামী ভোট দিতে পারতেন না। এবার সেই নিয়মেই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সার্ভিস অফিসারের স্বামী বা স্ত্রীকে ভোট দেওয়ার সমান অধিকার দেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কমিশনকে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য যে কোনও প্রতিষ্ঠান বা চত্বর দখলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগে কেবল স্কুল, কলেজ বা সরকারি কোনও দফতরই অধিগ্রহণ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হত। এবার থেকে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রয়োজন মতো যে কোনও চত্বর অধিগ্রহণ করতে পারে। সূত্রের খবর, শীতকালীন অধিবেশনেই কেন্দ্রের তরফে এই প্রস্তাবনাগুলি পেশ করা হতে পারে।