চণ্ডীগঢ়: হাতে মাত্র কয়েক মাস সময়, তারপরই বিধানসভা নির্বাচন পঞ্জাবে (Punjab Assembly Election 2022)। দলের অন্দরে একের পর এক কোন্দল মিটিয়ে আপাতত নির্বাচনী প্রচারে মন দিতে চায় কংগ্রেস (Congress)। বিজেপিকে হারিয়ে পঞ্জাবে নিজেদের শাসন ধরে রাখতে শক্তিশালী নির্বাচনী প্রচার চালাতে চাইছে কংগ্রেস, আর সেখানেই উঠে আসছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর(Prashant Kishor)-র নাম। যদিও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পিকে-র ক্ষুরধার মস্তিষ্ককে ব্যবহার করা হবে কিনা, তা নিয়ে দ্বিধা বিভক্ত কংগ্রেস। এমনটাই সুর শোনা গেল পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধু(Navjot Singh Sidhu)-র গলায়।
২০১৭ সালে প্রশান্ত কিশোরের মদতেই পঞ্জাবে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। চলতি বছরের মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের দুর্দান্ত ফলাফলও আরও একবার প্রমাণ দিয়েছে ভোটকুশলী হিসাবে কতটা দক্ষ প্রশান্ত কিশোর। দুদিন আগেই পঞ্জাবের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নিও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য পিকের শরণাপন্নই হতে পারে কংগ্রেস। শুক্রবার এ বিষয়ে পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দলের হাই কম্যান্ডই।
গতকালই পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা ফিরিয়ে নেন নভজ্যোত সিং সিধু। চণ্ডীগঢ়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আমি আমার পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিয়েছি। যেদিন নতুন অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং ডিজিপির নতুন প্যানেল আসবে, সেদিন থেকে আমিও আমার অফিসের কাজ শুরু করব।”
সেখানেই তাঁকে পিকে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। যদি মুখ্যমন্ত্রী ওনাকে আনতে চান, তবে দলের হাই কম্যান্ড এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।” উল্লেখ্য, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের মতোই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নির সঙ্গে সুসম্পর্ক নেই নভজ্যোতের, এমনটাই দলীয় সূত্রে খবর। এমনকি, সিধুর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পিছনেও চন্নিকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচন এবং মন্ত্রিসভায় চন্নির পছন্দের নেতাদের জায়গা দেওয়া একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হয়।
অমরিন্দর সিংয়ের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা এবং পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে ৪০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করার পিছনে সরাসরি হাত ছিল প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোত সিং সিধুর। অমরিন্দরের দলত্যাগে কংগ্রেস আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেতে পারে, এ কথা আগে থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল। বর্তমানে নতুন মুখ্যমন্ত্রী চন্নির সঙ্গেও সিধুর ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হওয়ায় নির্বাচনী প্রচারে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই টলোমলো পরিস্থিতিতেই ফের একবার পঞ্জাব নির্বাচনে উঠে এসেছে প্রশান্ত কিশোরের নাম। ২০১৭ সালে বিজেপি-আকালি দলের জোটকে হারিয়ে কংগ্রেসকে জেতাতে বিশেষ সাহায্য করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। এরপরই চলতি বছরের মার্চ মাসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং প্রশান্ত কিশোরকে মুখ্য পরামর্শদাতা হিসাবে নিয়োগ করেন। যদিও অগস্ট মাসেই পিকে এই পদ থেকে ইস্তফা দেন। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের অংশ হতে চান না তিনি।
২০২৩ সালের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাক তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে রাজি হলেও অতীতে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল, তা মাথায় রেখে এ বার পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে পিকে শাসক দলকে ভোট বৈতরণী পার করাতে সাহায্য করবে কিনা, তাই-ই এখন দেখার।
আরও পড়ুন: COVID-19: ‘করোনার বাড়াবাড়ন্তে মদত জোগাতে পারে বায়ুদূষণ’, আসন্ন বিপদ নিয়ে কী বললেন এইমস প্রধান?