কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। ফাইল চিত্র।
নয়া দিল্লি: সামনেই বাজেট অধিবেশন (Budget Session 2022)। আগামী এক বছরের দেশের অর্থনীতি কোন পথে পরিচালিত হবে, তা স্থির হবে এই অধিবেশনেই। তবে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে কংগ্রেস (Congress) এবার মূল্যবৃদ্ধি ছাড়াও একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছে। শুক্রবারই দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী(Sonia Gandhi)-র নেতৃত্বে বৈঠকে বসেছিল কংগ্রেসের সংসদীয় বিষয়ক নীতি নির্ধারক দল। সেই বৈঠকেই স্থির হয়, এবারের অধিবেশনেও সমমনস্ক রাজনৈতিক দলগুলিকেই পাশে চাইবে কংগ্রেস।
কে কে ছিলেন বৈঠকে?
কংগ্রেস দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী ছাড়াও গতকালের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, লোকসভার দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, একে অ্যান্টনি, কেসি বেণুগোপাল, আনন্দ শর্মা, গৌরব গগৌ, কে সুরেশ. মানিকাম ঠাকুর ও মণীশ তিওয়ারি।
কী কী বিষয়ে আলোচনা হল?
শুক্রবার কংগ্রেসের সংসদীয় নীতি নির্ধারক দলের বৈঠকে মূলত সাধারণ মানুষের নানা সমস্যা নিয়েই আলোচনা হয়। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে মূল্যবৃদ্ধি, চাকরি ও অর্থনীতির যে সঙ্কট দেখা গিয়েছে, তা নিয়ে সরব হওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এছাড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণ, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের প্রবেশ ও জায়গা দখল এবং করোনায় মৃতদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ ঘোষণার দাবিও জানানো হবে।
সমমনস্ক দলগুলির সঙ্গে জোট:
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতা জানান, কৃষকদের সমস্যা, চিনের আগ্রাসন নীতি, করোনায় মৃতদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ, এয়ার ইন্ডিয়ার বিক্রি সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলি নিয়ে এবারের বাজেট অধিবেশনে তুলে ধরা হবে। সমমনস্ক যে রাজনৈতিক দলগুলি রয়েছে, তাদেরকে পাশে চাইছে কংগ্রেস। বিরোধী দলগুলির সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
চর্চার বিষয় হতে পারে এয়ার ইন্ডিয়া:
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এক প্রবীণ শীর্ষ নেতা গতকালের বৈঠকে বলেন, “আমরা সরকারের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে জানতে চাই। কীভাবে তারা ঋণের একটা বড় অংশ বাদ দিল এবং এয়ার ইন্ডিয়ার ক্রেতাদের কাছ থেকে ২৭০০ কোটি টাকা পেল, সেই সম্পর্কে জানতে হবে।”
অপর এক নেতা জানান, এয়ার ইন্ডিয়া হস্তান্তরের পরও যে সমস্যাগুলি থেকে যাবে, তা নিয়েও সরব হতে হবে। কংগ্রেস পিএসইউ-র বিরোধী নয়, তবে যে পদ্ধতিতে সরকার তা পরিচালন করছে, তার বিরোধীতা করছি আমরা।
দলের উপরই দায়িত্ব ছাড়লেন সনিয়া:
বৈঠকের দায়িত্ব তাঁর উপর থাকলেও, বাজেট অধিবেশনে দল কী কী বিষয়ে সরব হবে, তা বেছে নেওয়ার দায়িত্ব দলীয় নেতাদের উপরই ছেড়ে দেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। তিনি বৈঠকের সকল সদস্যদের কাছ থেকেই মতামত জানতে চান। একইসঙ্গে মল্লিকার্জুন খাড়গেকেই সমমনস্ক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দেন তিনি।
তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ নয়:
এক কংগ্রেস নেতা জানান, শীতকালীন অধিবেশনে যে দলগুলির সঙ্গে একজোট হয়েছিল কংগ্রেস, এবারও তাদের সঙ্গেই কথা বলা হবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সম্ভাবনা নেই, কারণ তারা নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়াও তৃণমূল যে বিরোধী জোটের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করবে, সেই আশাও করা হচ্ছে না। তাদের অন্য ইস্যু থাকতেই পারে। কংগ্রেস নিজেদের বাছাই করা ইস্যুতেই সরব হবে।