নয়া দিল্লি: ছোট থেকেই ওদের শেখানো হয় সফল হতে হবে। ইঁদুর দৌড়ে প্রথম হতে হবে। আর এই দৌড়ে নেমেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে শিশু মন। মনে উঁকি মারে নানা ভুল চিন্তা। সেই চাপের মুখে মুখ থুবড়ে পরে ছোট্ট ছোট্ট কচি পাতা। সম্প্রতি ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (NCRB) একটি তথ্য প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ২৪ হাজারেরও বেশি নাবালক-নাবালিকা আত্মহত্যা করেছে। এদের সকলেরই বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। রাজ্যের নিরিখে এই তালিকায় প্রথমে রয়েছে মধ্য প্রদেশের নাম। এরপরই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তৃতীয় স্থানে মহারাষ্ট্র, চারে তামিলনাড়ু।
সম্প্রতি এনসিআরবি সংসদে শিশুদের আত্মহত্যা নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে এই আত্মহত্যার ক্ষেত্রে একটা বড় অংশেরই কারণ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া। ওই তথ্য অনুযায়ী ২৪ হাজার ৫৬৮ জন উল্লিখিত তিন বছরে আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৩২৫ জন মেয়ে রয়েছে। ২০১৭ সালে ৮ হাজার ২৯ জন ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছেলে মেয়ে নিজেকে চরম পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১৬২তে। ২০১৯ সালে তা হয়েছে ৮ হাজার ৩৭৭।
মধ্য প্রদেশে ৩ হাজার ১১৫ জন আত্মঘাতী হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আত্মঘাতীর সংখ্যা ২ হাজার ৮০২ জন। এরপরই মহারাষ্ট্র, ২ হাজার ৫২৭ জন। তামিলনাড়ুতে সংখ্যাটা ২ হাজার ৩৫। মোটের মধ্যে ৪ হাজার ৪৬ জন আত্মহত্যা করেছে শুধুমাত্র পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার কারণে। বিবাহ সংক্রান্ত কারণের জেরে আত্মঘাতীর সংখ্যা ৬৩৯। এর মধ্যে অবশ্য অধিকাংশই (৪১১) মেয়ে। শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে ৮১ জন। এ ছাড়াও প্রিয়জনকে হারিয়ে কিংবা মাদকাসক্ত হয়েও নিজেকে শেষ করে দিয়েছে বহু নাবালক-নাবালিকা।
মনোবিদরা বলছেন, ছোটরা অনেক সময়ই আবেগপ্রবণ হয়ে আত্মহত্যার মতো চরম পদক্ষেপ করে ফেলে। তা কারও উপর রাগ থেকে হতে পারে, অভিমান থেকে হতে পারে, অতিরিক্ত চাপের কারণেও হতে পারে। আজকাল বাচ্চাদের উপর পরিবারের পাশাপাশি সামাজিক চাপও অনেক। সে সব মেটাতে গিয়ে ওদের শৈশব নষ্ট হয়। যা ভীষণ ভাবে ওদের মনকে প্রভাবিত করে। তা থেকেই বড় কোনও ভুল করে বসে ওরা। আরও পড়ুন: ‘হাত’ ছেড়েছিলেন সদ্য, দু’বারের কংগ্রেস বিধায়ককে দলে স্বাগত জানালেন মুখ্যমন্ত্রী