নয়া দিল্লি: প্রযুক্তির সঙ্গে ভারত শুধু খাপ খাইয়েই নিচ্ছে না, বরং এই ক্ষেত্রে ভারত গোটা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ), প্রধানমন্ত্রী মদীর সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। এদিন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, বিল গেটসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আলোচনায় উঠে এল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো বিস্তৃত বিষয়। ভারতীয়রা যেভাবে অতি দ্রুত বদলে নতুন নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণ করছে এবং গোটা পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন গেটস।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলন
ভারতের সভাপতিত্বে গত বছর নয়া দিল্লিতে জি২০ গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলন হয়েছিল। সেই সম্মেলনও উঠে আসে দুই ক্ষেত্রের দুই নেতার আলোচনায়। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে আমাদের বহু আলোচনা হয়েছিল। আপনি হয়তো দেখেছেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার আগে, জি২০ কার্যক্রমগুলি এদিক-ওদিক, এদিক-ওদিক করছিল। আমরা এখন জি২০-র মূল উদ্দেশ্যগুলিকে মূলধারায় নিয়ে এসেছি। আশা করি আপনার নিজের অভিজ্ঞতাও একই কথা বলে।” বিল গেটস বলেন, “জি২০ অনেক বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়েছে। ভারতকে এই সম্মেলনের আয়োজনের সময় ডিজিটাল উদ্ভাবনের মতো অনেক নতুন বিষয় তুলে এনেছে। কীভাবে উত্তরের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার বদলে দক্ষিণে-দক্ষিণে সহযোগিতা অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছে। আপনি ভারতে অতীতে যে সাফল্য অর্জন করেছেন, তা নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠান এতটাই উত্তেজিত যে, আমরা এই সাফল্য অন্য অনেক দেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় অংশীদার হতে চাই।”
ভারতে ডিজিটাল বিপ্লব
ডিজিটাল বিপ্লব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “ইন্দোনেশিয়ায় জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়, সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা আমাদের দেশের ডিজিটাল বিপ্লব সম্পর্কে তাদের কৌতূহল প্রকাশ করেছিলেন। আমি তাদের বলেছিলাম, আমরা প্রযুক্তিকে গণতান্ত্রিক করেছি। প্রযুক্তিকে জনগণের দ্বারা এবং জনগণের জন্য চালনা করেছি।” ভারতের প্রশংসা করে বহিল গেটস জানান, ভারতে এখন এক “ডিজিটাল সরকার” রয়েছে। এরপরই তিনি বলেন, “ভারত শুধু প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়েই নিচ্ছে না, বরং এই ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে।”
নমো ড্রোন দিদি
বিল গেটসকে ‘নমো ড্রোন দিদি’ প্রকল্পের বিষয়েও অবগত করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানান, প্রযুক্তিকে তাঁর সরকার দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চান। তিনি বলেন, “বিশ্বে প্রযুক্তির ব্যবহারে বিভাজনের কথা যখন শুনতাম, তখনই আমি ঠিক করেছিলাম, আমার দেশে এমন কিছু ঘটতে দেব না। ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য। ভারত নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। আমি ‘নমো ড্রোন দিদি’ প্রকল্প শুরু করেছি। অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে চলছে এই প্রকল্প। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, যে তারা সাইকেলও চড়তে জানত না। কিন্তু এখন তারা প্রত্যেকে পাইলট এবং ড্রোন ওড়াতে পারে। মানসিকতাই বদলে গিয়েছে।”