নয়া দিল্লি: বিভিন্ন কারণে, সংসদে সরকারের প্রস্তাবিত বিলগুলির বিরোধিতা করে বিরোধী পক্ষ। কিন্তু, বিলটির নাম উচ্চারণ করাই কঠিন, এই যুক্তিতে কোনও বিলের বিরোধিতা, সম্ভবত ভারতীয় সংসদে এর আগে দেখা যায়নি। বুধবার, লোকসভায় অসামরিক বিমান চলাচল সম্পর্কিত একটি বিলকে কেন্দ্র করে এই কাণ্ডই ঘটল। ভারতে অসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক নিয়ম-কানুনগুলি গোছানোর জন্য এবং ব্রিটিশ আমলের বিমান আইন, ১৯৩৪-কে প্রতিস্থাপন করার জন্য, অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী, রামমোহন নাইডু একটি বিল উপস্থাপন করেন। বিলটির নাম, ভারত বায়ুযান বিধেয়ক, ২০১৪। এই বিল প্রবর্তনের পরই, এর হিন্দি নাম নিয়ে আপত্তির তোলেন বিরোধীরা।
রেভেলিউশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টির সাংসদ, এনকে প্রেমচন্দ্রন এই বিলের বিরোধিতা করে দাবি করেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদে আনা বিলগুলি ইংরেজিতে হওয়া উচিত। প্রেমচন্দ্রন যুক্তি দেন, সংবিধানের ৩৪৮ ১খ, ১২০ এবং ৩৪০ অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করেছে বিলটি। তিনি আরও বলেন, সরকারি ভাষা আইনের ধারা ৩-ও মানেনি এই বিল। তিনি বলেন, “মূল বিলটির নাম ছিল এয়ারক্র্যাফ্ট বিল, ১৯৩৪। বিলটির শিরোনাম ছিল ইংরেজিতে। বিলটির বিষয়বস্তুও ছিল ইংরেজিতে। কিন্তু, সরকার শুধু বিলের নাম পরিবর্তন করতে চায়। দক্ষিণ ভারতের মানুষদের জন্য ভারতীয় বায়ু বিধেয়ক উচ্চারণ করাও অত্যন্ত কঠিন। এর পিছনে কী যুক্তি রয়েছে? আমি এই বিলের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি।”
জবাবে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী,রামমোহন নাইডু বলেন, “প্রেমচন্দ্রনজি যে উদ্বেগগুলি তুলেছেন, তা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য সংহিতা প্রবর্তনের সময়ই সুরাহা করা হয়েছিল। এই বিষয়ে আগে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আইনটিকে ভারতীয় বায়ুযান বিধেয়ক হিসেবে উল্লেখ করে আমরা কোনও সাংবিধানিক বিধান লঙ্ঘন করিনি। আমরা ভারতের একটি নতুন পরিচয় তৈরি করার চেষ্টা করছি এবং তার জন্ইয আমরা এই নামটি রেখেছি। এতে কারও সমস্যা হওয়া উচিত নয়। লেখাটা শুধুমাত্র ইংরেজিতে আছে। এতে কোনও সমস্যা হওয়া উচিত নয়। এয়ারক্র্যাফ্ট বিল আনা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে। এরপর থেকে ২১টি সংশোধনী আনা হয়েছে। এগুলি টুকরো টুকরো করে মূল আইনে যোগ করা হয়েছে। এই কারণে, আইনটিতে অনেক বিভ্রান্তি ছিল। প্রচুর ধূসর এলাকা ছিল, প্রচুর অপ্রয়োজনীয় বিষয় ছিল। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন যে নির্দেশিকা জারি করে, আমরা বিশ্বব্যাপী তা অনুসরণ করি। আমরা আইসিএও-র এক গুরুত্বপূর্ণ স্বাক্ষরকারী। এই কারণেই আমরা একটি নতুন আইন নিয়ে এসেছি। এটা শুধুমাত্র অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলি দূর করবে না বরং আইসিএও সুপারিশগুলিও মানবে।”