চেন্নাই: রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেন মিশে গিয়েছে পরিবারতন্ত্র। তামিলনাড়ুতে আবারও পরিবারবাদের ছায়া। আরও একবার বাবার হাত ধরে উত্থান ছেলের। শনিবারই সকলকে চমকে দিয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন তাঁর পুত্র তথা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী ও ডিএমকে-র যুব শাখার সেক্রেটারি উদয়নিধিকে রাজ্যের নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করলেন। এই ঘোষণার পরই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। লাগাতার আক্রমণ জারি বিরোধীদের।
তামিলনাডুর গত বিধানসভা নির্বাচন থেকে রাজ্য রাজনীতির পথচলা শুরু। লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই আভাস মিলেছিল উদয়নিধির উত্থানের। গত জানুয়ারি মাসেই বড় ঘোষণা হত, কিন্তু উদয়নিধি স্ট্যালিনের ‘সনাতন ধর্ম’ মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের জেরে পরিকল্পনা পিছিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়েছিল ইন্ডিয়া জোটও। এরপরে লোকসভা নির্বাচন, কালাকুরিচি বিষমদ কাণ্ড, বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল উদয়নিধির পদোন্নতি। অবশেষে সেই ঘোষণাই হল।
সূত্রের খবর, গত অগস্ট মাসেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে উদয়নিধিকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হবে। অপেক্ষা করা হচ্ছিল সেন্থিল বালাজির জেলমুক্তির, যিনি ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেন্থিল বালাজি মুক্তি পেতেই বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। একদিকে ছেলে উদয়নিধিকে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ দিলেন, অন্যদিকে, জামিনে মুক্ত সেন্থিল বালাজিকে ফের মন্ত্রীপদ দিলেন। আগে পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন সেন্থিল, এবার তাঁকে কোন মন্ত্রক দেওয়া হল, তা জানা যায়নি।
ক্যাবিনেট নতুন করে সাজাতে দুগ্ধ ও ডেয়ারি উন্নয়ন মন্ত্রী টি মানো থাঙ্গারাজ, সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী জিনজি মাসথান ও পর্যচন মন্ত্রী কে রামাচন্দ্রনকে সরিয়ে তাঁদের জায়গায় তিন নতুন মুখ গোভি চেজ়িয়ান, আর রাজেন্দ্রন ও এসএম নাসার-কে যোগ করা হচ্ছে মন্ত্রিসভায়।
উদয়নিধির উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ঘোষণা হতেই ডিএমকে-র মুখপাত্র সালেম ধরণীধরন বলেন, “আমি উদয়নিধিকে পদোন্নতির জন্য অভিনন্দন জানাই। ও এই পদের যোগ্য। ক্রীড়ামন্ত্রী হিসাবে বিশ্বের মানচিত্রে তামিলনাড়ুকে চিনিয়েছে ও, তা সে দাবা অলিম্পিয়াড-ই হোক বা অন্য কিছু। কোনও ক্রীড়ামন্ত্রীকে এত সক্রিয়, এত কাজ করতে দেখা যায়নি। দলের সবাই চেয়েছিলেন ওঁ উপ-মুখ্যমন্ত্রী হোক।”
অন্যদিকে, বিরোধী দল এআইএডিএমকে-র তরফে উদয়নিধির উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার চরম বিরোধিতা করা হয়। দলের মুখপাত্র কোভৈই সাথিয়া বলেন, “উদয়নিধির এই পদোন্নতি গ্রহণযোগ্য নয়। ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন নিজে বলেছিলেন যে তাঁর পরিবার থেকে কেউ রাজনীতিতে প্রবেশ করবে না। বাবা (করুণানিধি), ছেলে (এমকে স্ট্যালিন), এখন নাতি (উদয়নিধি)- পরিবারতন্ত্র চলছে। ডিএমকে-র অর্থ একটাই পরিবার, এই স্ট্যালিন পরিবার।”