পটনা: গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলের চোখ এখন বিহারে। রাজ্যের মহাগঠবন্ধন সরকারের দুই শরিক – আরজেডি এবং জেডিইউ-এর মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। যে কোনও মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে, ফের একবার এনডিএ শিবিরে যোগ দেবেন নীতীশ, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। নীতীশের এই ডিগবাজি, অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দিয়েছে ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যতকেও। বিহারের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে নিয়ে জোর চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এরই মধ্যে বিহারের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তাঁর মতে, এখন যে দলই নীতীশের হাত ধরবে, তাকেই ডুবতে হবে। কটাক্ষ করে তিনি নীতীশকে আলুর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁর দাবি, বিহারের মানুষ যাকেই ভোট দিক মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত নীতীশই হবেন। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হলে সমগ্র বিহারের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।।
বর্তমানে বিহার জুড়ে জন সুরজ যাত্রা করছেন প্রশান্ত কিশোর। বিহারের মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। কীসের ভিত্তিতে ভোট দেওয়া উচিত, কীভাবে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হতে পারে, তা বোঝাচ্ছেন। এই মুহূর্তে যাত্রা নিয়ে তিনি বেগুসরাইয়ের বিভিন্ন ব্লক ও গ্রাম ঘুরছেন। সেকান থেকেই তিনি এক ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন, নীতীশ কুমার তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক পতন ঘটতে চলেছে। এখন, যে দলই নীতীশ কুমারের সঙ্গে হাত মেলাবে, তারা নিজেরাই ডুবে যাবে। মহাজোট হোক বা এনডিএ, নীতীশ কুমারের সঙ্গে যেই যাবে, নীতীশ তাকেই ডুবিয়ে দেবেন। মানুষের আর নীতীশ কুমারের উপর কোনও আস্থা নেই।
প্রশান্ত কিশোর আরও বলেছেন, তিনি আগেই বলেছিলাম, মহাজোটের আওতায় ভোটে লড়লে নীতীশ ৫টি আসনও পাবেন না। আমার বক্তব্যে তাঁর দলের নেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা জানেন, প্রশান্ত কিশোর যা বলে, তাই ঘটে। আর সেই জন্য নীতীশ এখন বাম-ডানের ফাঁদে পড়েছেন। এখন তিনি ভাবছেন এনডিএ-তে যোগ দেবেন, নাকি মহাজোটের আওতায় লড়বেন। তিনি যদি ৫টির বেশি আসন জেতেন, আমি সমগ্র বিহারের মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে ভুলের জন্য ক্ষমা চাইব।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশান্ত কিশোরের একটি কয়েক দিনের পুরোনো ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে। জন সুরাজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে ভিডিয়োটি শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিয়োটিতে নীতীশ কুমারকে ‘বিহারের রাজনীতির আলু’ বলছেন প্রশান্ত কিশোর। প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, “নীতীশ কুমারের শক্তি হল তিনি একজন আলু। আলু ছাড়া সবজি বানানো যায় না। বিহারের যাকে খুশি ভোট দিতে পারে। শেষ পর্যন্ত নীতীশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আপনি কংগ্রেসকে ভোট দিতে পারেন, আরজেডিকে ভোট দিতে পারেন, বিজেপিকে ভোট দিতে পারেন বা জেডিইউকে ভোট দিতে পারেন। নীতীশ হেসে বলবেন, দাঁড়াও হে। আমিই আবার চেয়ারে বসব। এটাই তাঁর শক্তি।”