কলকাতা: আজ ২১ জুলাই। তৃণমূলের মহা কর্মসূচি। আজ ধর্মতলায় জনপ্লাবন, মানুষের ভিড়। ডিম-ভাত-মাংস ভাতের আয়োজন, বাহারি সাজে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা, উল্লাস-উন্মাদনা! রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন থিম নিয়ে ধর্মতলায় আসছেন কর্মী-সমর্থকরা। কার্যত যেন থিমের কার্নিভাল! কিন্তু ৩১ বছর আগের এদিনের ছবিটা ছিল অন্য। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা একটি কর্মসূূচি ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় কলকাতায়। সেই রক্তঝরা দিনের ক্ষত এখনও দগদগে। আর সেই স্মৃতি স্মরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৯৩ সাল। রাজ্যে তখন ক্ষমতায় জ্যোতি বসুর সরকার। তৎকালীন রাজ্য সরকার সিপিএমের বিরুদ্ধে ছাপ্পা-রিগিংয়ের মতো একাধিক অভিযোগে সরব ছিলেন বিরোধীরা। আর তৎকালীন বিরোধীদের মধ্যে অন্যতম মুখ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম তখনও হয়নি, মমতা তখন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। তাঁর ডাকে মহাকরণ অভিযান কর্মসূচি নেওয়া হয়।
ডেলা, কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুব কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা রাজপথে ভিড় করেন। প্রথমে এই দিনটা ধার্য করা হয়েছিল ১৪ জুলাই। কিন্তু তৎকালীন রাজ্যপাল নুরুল হাসানের প্রয়াণের কারণের দিন পরিবর্তিত করে ২১ জুলাই করা হয়।
সেদিন মহাকরণের কাছে পৌঁছানোর আগেই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় কর্মীদের। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে। ব্যারিকেড টপকে এগনোর চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। শুরু হয় কাদানে গ্যাসের সেল ফাটানো, লাঠিচার্জ। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। এরই মধ্যেই পুলিশের গুলিতে ১৩ জন যুব কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকের মৃত্যু হয়।মৃত্যু হয় বন্দন দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, বিশ্বনাথ রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, প্রদীপ রায়, রঞ্জিত দাস, মহম্মদ আব্দুল খালেক, ইনু। আর সেই থেকেই রক্তঝরা সেই দিন স্মরণীয় হয়ে থাকে। পুলিশ কার নির্দেশে গুলি চালিয়েছিল সেদিন, সে উত্তর এখও অধরা।
এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী। ২১ জুলাইয়ের রক্তঝরা দিন তিনি এখনও স্মরণ করে চলেন। বর্তমান সমাজের কাছে ২১ জুলাইয়ের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব বোঝানোর জন্য বারবার এই ঐতিহাসিক দিন স্মরণ করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।