কলকাতা: রাজ্যে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য রুখে সরব শাসক নেতৃত্বই। এর আগে কলকাতা থেকে জেলার একাধিক তৃণমূল নেতা পুলিশ ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন। এবার সরব ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবির। ফুলটাইম পুলিশমন্ত্রী হিসাবে অভিষেককে চান তিনি। তাঁর মন্তব্য, ২০২৬ সালে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ডেপুটি করা হোক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পুলিশমন্ত্রী হিসাবেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “ফুলটাইমের একজন পুলিশমন্ত্রী থাকলে, আমার মনে হয়, তাঁর নজর এড়িয়ে কোনও অপরাধ সংগঠিত হবে না।” তাঁর যুক্তি, “অনেক সময়ে সিএম এত ব্যস্ত থাকেন, আমরা ইচ্ছা করলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি না, নিজেদের আবেদন নিবেদন সময় মতো পৌঁছতে পারি না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকটা দায়িত্ব নিয়ে নিলে, বাংলার মানুষ অনেকটা উপকৃত হবেন।”
আরজি কর কাণ্ডের সময়ে বিরোধীরা দাবি তুলেছিলেন, রাজ্যে ফুলটাইমার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রয়োজন রয়েছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী একাধিক দফতর সামলান। এদিন আবার হুমায়ুন কবির ফুলটাইমার পুলিশমন্ত্রী চাইলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আর তাঁর বক্তব্য়ের মধ্যে যেন সেই একই সুর শোনা গেল। যাঁকে ডেপুটি হিসাবে আনা হবে, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই দায়িত্ব দেওয়ার সওয়াল করেন তিনি।
প্রশ্ন উঠছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশমন্ত্রী হিসাবে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা সামলাতে পারছেন না? বিরোধীদের সেই দাবিই সমর্থন করলেন হুমায়ুন? প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে ইউসুফ পাঠানকে যখন প্রার্থী করা হয়েছিল, তখন বহিরাগত তত্ত্ব খাঁড়া করে সুর চড়িয়েছিলেন হুমায়ুন। সে সময়ে তাঁকে ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে ডেকে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর অভিষেকের বার্তা মেনে নিয়ে তিনিও ইউসুফের হয়ে ভোটপ্রচার করেছিলেন।
এদিন বিধানসভায় নিজের বক্তব্যের সমর্থনে হুমায়ুন কবির TV9 বাংলাকে বলেন, “যোগ্য উত্তরসূরী যখন রয়েছে, তাঁদের মধ্যে যে কম্বিনেশন রয়েছে, তাতে অভিষেক যদি ডেপুটি সিএম হয়, স্বরাষ্ট্রদফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে বাংলার মানুষের মঙ্গল হবে। দলেরও ভালো হবে।”
এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী-পুলিশমন্ত্রী পার্ট টাইমার। রাজ্য়ের অবস্থা তো দেখাই যাচ্ছে। কিন্তু হুমায়ুন কবির কেন বলছেন, কেউ তাঁকে দিয়ে বলাচ্ছে কিনা, এ সব প্রশ্নে আমাদের গিয়ে লাভ নেই।”
এই নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “উদাহরণের কথা বলার কোনও যৌক্তিকতা নেই। কারোর কোনও বক্তব্য থাকলে, পার্টির ঊর্ধ্বতনকে জানাতে পারে। কারোর কিছু মনে হল, আর প্রকাশ্যে বলা, তা অবাঞ্ছিত।”