Baghajatin: ‘প্রোমোটার বলেছিল সব ঠিক করে দেবে… আর ঠিক করতে গিয়ে মাথার ওপরের ছাদটাই নিয়ে নিল…’, কী করলেন বিল্ডার্স? রাস্তায় বাঘাযতীনের অভিজাত আবাসনের বাসিন্দারা

সুজয় পাল | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jan 14, 2025 | 5:38 PM

Baghajatin: পাশের বাড়ি থেকে ঠিক দেড় হাত দূরত্বেই এই বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ২০ বছর আগে এখানে একটি খাল ছিল। সেই খালটিকে বোজানো হয়েছে। তারপর এই আবাসন নির্মীত হয়। অভিযোগ, মাটি বোজানোর ক্ষেত্রে সঠিক উপায় অবলম্বন করা হয়নি।

Baghajatin: প্রোমোটার বলেছিল সব ঠিক করে দেবে... আর ঠিক করতে গিয়ে মাথার ওপরের ছাদটাই নিয়ে নিল..., কী করলেন বিল্ডার্স? রাস্তায় বাঘাযতীনের অভিজাত আবাসনের বাসিন্দারা
মুহূর্তে মাথার ছাদ হারালেন আবাসিকরা
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: গার্ডেনরিচের পর বাঘাযতীন। আস্ত একটা গোটা আবাসন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। অভিঘাতে পাশের দুটো আবাসনও হেলে পড়েছে। কেন ভেঙে পড়ল, তা নিয়েই উঠছে বিস্তর প্রশ্ন। জানা যাচ্ছে, জমির চরিত্র বদল করেই হয়েছিল নির্মাণ।

কাউন্সিলর  মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৮-১০ বছর আগেকার বাড়ি। আমি ওনারদের থেকে যা শুনলাম, বাড়ির ধার দিয়ে জল নামছিল। যাঁরা নির্মাণের কাজ করেছিলেন, তাঁদেরকে ডেকেওছিলেন তাঁরা। প্রোমোটার তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন বাড়ি ছাড়তে। আমরা ঠিক করে দেব। বিল্ডিংয়ে ফাটল ধরেছে বলেও শুনলাম। তারপর লোহার ট্র্যাক দিয়ে উঁচু করা হচ্ছিল। তখন আমি খবর পেয়েই যাই। সেই কাজে বাধা দিই।”

কাউন্সিলর আরও বলেন, “ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ১-২ মাস আগেই অন্যান্যা জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তারপর লোহার ট্র্যাকশন দিয়ে তোলা চেষ্টা করেছিল দুদিন আগে। কিন্তু আজকে বিল্ডিংটা পাশের বাড়িতে হেলে পড়েছে। বাড়ি থেকে বিপজ্জনক দেখে বোঝা যায়নি।”

কিন্তু প্রাক্তন কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, ৮-১০ বছরের পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ছে। যিনি বানিয়েছেন, সেই ডেভলপারকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে, সেটা দুঃখজনক।

পাশের বাড়ি থেকে ঠিক দেড় হাত দূরত্বেই এই বাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ২০ বছর আগে এখানে একটি খাল ছিল। সেই খালটিকে বোজানো হয়েছে। তারপর এই আবাসন নির্মীত হয়। অভিযোগ, মাটি বোজানোর ক্ষেত্রে সঠিক উপায় অবলম্বন করা হয়নি। এলাকারই বেডিং স্টোর্সের মালিক তাপস সাহা এই জলা জমির ওপরেই আবাসনটি নির্মাণ করেন বলে জানা যাচ্ছে। জানা যাচ্ছে, বাড়ি হেলে গিয়েছিল কয়েক মাস আগেই। বাসিন্দাদের দাবি, তাপস সাহা তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন, ঠিক করে দেবেন। কিন্তু তা করতে পুরসভার কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আবাসনের বাসিন্দারা কয়েক মাস আগেই অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছিলেন, প্রোমোটার এদিকে বাড়ি উঁচু করার কাজ করছিলেন। আর তারপরই মঙ্গলবারের বিপর্যয়।

ওই আবাসনের এক বাসিন্দা শিউলি বলেন, “আমি তো ভাড়া বাড়িতে ছিলাম। পাশের বাড়ির বৌদি ফোন করে আমাদের ডেকে আনেন। শনিবার লিফটিং করেছেন। দু-তিন দিন কাজ বন্ধ ছিল।” হতাশায় ভেঙে পড়েছেন এক প্রৌঢ়। বললেন, “মাথার ওপরের ছাদটাই তো চলে গেল। এখন বুঝতে পারছি না কী হবে। ফ্ল্যাট তো বহুদিন আগেই কেনা হয়ে গিয়েছে। সব টাকা জলে গেল!”

এক তরুণী বলেন, “জলা জমিতে বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে যেটা বুঝি, প্রপার পাইলিং করা উচিত। এই ফ্ল্যাটটা আনঅথরাইজড্। তাও আবার দোতলা করার কথা ছিল, করেছে চার তলা।” ফ্ল্যাটের আরেক বাসিন্দা বললেন, “পুজোর আগেই প্রোমোটার এসে বললেন, লিফটিং করাবেন। ঢাল ঠিক হয়ে যাবে। ২ মাসের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের মাথার ছাদটাই তো চলে গেল!”

ইতিমধ্যেই বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পৌরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কলোনি এলাকায় যে যার নিজের বাড়ি করে নিচ্ছে, সেই বাড়িগুলোর স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি রয়েছে কিনা, সেটা দেখা হচ্ছে না। এখানে প্ল্যান নেওয়ার নিয়মই নেই। পুরনো প্ল্যানগুলোর ক্ষেত্রেও খতিয়ে দেখা উচিত। ভাগ্য ভালো কেউ বাড়িতে ছিলেন না।”

Next Article