
কলকাতা: যতক্ষণ না বাংলার প্রতিটি মানুষ ফর্ম পূরণ করছেন, ততক্ষণ তিনি এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করবেন না। বুধবার তাঁর রেসিডেন্ট অফিসে বুথ লেভেল অফিসার(BLO) ফর্ম দিয়ে যাওয়ার পর জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই মন্তব্যের পর জল্পনা শুরু হয়, মুখ্যমন্ত্রী ফর্ম পূরণ না করলে কী হবে? কী বলছে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম? অন্য ভোটারদের মতো মুখ্যমন্ত্রীকেও কি এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করতেই হবে? নির্বাচন কমিশনের নিয়ম বলছে, মুখ্যমন্ত্রী যদি ফর্ম পূরণ নাও করেন, সমস্যা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর ফর্ম পূরণের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
মুখ্যমন্ত্রীর কেন ফর্ম পূরণের বাধ্যবাধকতা নেই?
নির্বাচন কমিশনের নিয়মে রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী একজন ‘চিহ্নিত ভোটার’ বা ‘মার্কড ইলেক্টর’। মমতা ছাড়াও দেশের প্রধানমন্ত্রী, সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং ওজনদার নেতা-মন্ত্রীরা হলেন চিহ্নিত ভোটার। এই চিহ্নিত ভোটারদের এনুমারেশন ফর্ম পূরণের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কারণ, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের সম্পর্কে আলাদা করে তথ্য রাখা হয়। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাঁদের নাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই সুবিধা পাবেন। তিনি এনুমারেশন ফর্ম জমা না দিলেও তাঁর নাম নথিভুক্ত হয়ে যাবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার। ওই কেন্দ্রের বিধায়কও তিনি। থাকেন ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে। বুধবার সংশ্লিষ্ট বুথের বিএলও তাঁর রেসিডেন্ট অফিসে গিয়েছিলেন। ফর্মও দিয়ে আসেন। একাধিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে ফর্ম নিয়েছেন। এই নিয়ে গুঞ্জন শুরু হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতা লেখেন, “দায়িত্বপ্রাপ্ত BLO আমাদের পাড়ায় এসেছিলেন তাঁদের নির্দিষ্ট কাজ করতে। কর্মসূত্রে, আমার রেসিডেন্স অফিসে এসে – রেসিডেন্সের ক’জন ভোটার জেনেছেন এবং ফর্ম দিয়ে গিয়েছেন। যতক্ষণ না বাংলার প্রতিটি মানুষ ফর্ম পূরণ করছেন,আমি নিজে কোনও ফর্ম পূরণ করিনি এবং করবও না।” নিজের হাতে বিএলও-র কাছ থেকে এনুমারেশন ফর্ম গ্রহণের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার বলে তিনি সরব হন।
মঙ্গলবারই ‘এসআইআর আতঙ্কের’ প্রতিবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মিছিল করেছে তৃণমূল। একইসঙ্গে শাসকদল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, একজন বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে তারা। আবার বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলার প্রতিটি মানুষ ফর্ম পূরণ না করা পর্যন্ত তিনিও ফর্ম পূরণ করবেন না। কমিশনের নিয়ম অবশ্য বলছে, মুখ্যমন্ত্রী ফর্ম পূরণ না করলেও কোনও সমস্যা নেই।