AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Calcutta High Court: ‘আদালত মধ্যযুগের নাইট নয় যে হেলমেট পরে ঘুরবে’, সিঙ্গল বেঞ্চের কোন কোন বিচারে আপত্তি ডিভিশন বেঞ্চের

Abhijit Ganguly: এই মামলায় দুর্নীতি প্রমাণিত হয়নি বলে উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। তাই যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ একধাক্কায় ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল।

Calcutta High Court: 'আদালত মধ্যযুগের নাইট নয় যে হেলমেট পরে ঘুরবে', সিঙ্গল বেঞ্চের কোন কোন বিচারে আপত্তি ডিভিশন বেঞ্চের
| Updated on: Dec 03, 2025 | 11:26 PM
Share

২০২৩-এর মে মাসে যখন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একধাক্কায় ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তখন তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। পথে নেমেছিলেন চাকরিহারারা। পরে ডিভিশন বেঞ্চ স্থগিতাদেশ দেয়। মামলা হওয়ার মাত্র ৮ মাস পরই এই নজিরবিহীন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বিচারপতি নিজে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে দুর্নীতির শিকড় খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। আজ, বুধবার সেই চাকরি বহাল রেখে সিঙ্গল বেঞ্চের একাধিক যুক্তিকেই খণ্ডন করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।

এদিন রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বৈধ ও বহাল থাকবে। বোর্ড বা রাজ্য সরকার চাইলে ভবিষ্যতের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনতে পারে, কিন্তু বর্তমান চাকরিগুলো ছাঁটাই করা যাবে না। তবে যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট অপরাধের প্রমাণ আছে, কেবল তাঁদের ক্ষেত্রেই আলাদা তদন্ত চলতে পারে বলে উল্লেখ করেছে আদালত।

১. ন্যাচারাল জাস্টিসের অভাব

যাঁদের চাকরি বাতির করেছিল সিঙ্গল বেঞ্চ, তাঁদের কেউই আদালতে নিজের বক্তব্য পেশ করতে পারেনি। কোনও নোটিসও দেওয়া হয়নি তাদের। হয়নি কোনও শুনানি। এতে ন্যাচারাল জাস্টিসের অভাব হয়েছে বলে মনে করছে ডিভিশন বেঞ্চ। কোনও পক্ষের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার কথা শোনা বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করা হয়েছে অর্ডার কপিতে।

২. এত দেরি কেন!

২০১৭ সালে প্রাথমিকের সংশ্লিষ্ট প্যানেলে নিয়োগ হয়। ২০২২ সালে অর্থাৎ প্রায় পাঁচ বছর পরে মামলা দায়ের হয়। ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, এতদিন কোনও অভিযোগ না করে হঠাৎ করে মামলা করা হল কেন! আদালতের পর্যবেক্ষণ, “যে ব্যক্তি নিজের অধিকার রক্ষায় দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকে, তার দাবি আদালত মেনে নেবে না।”

৩. দোষ প্রমাণ না করে চাকরি বাতিল কেন!

এই মামলায় দুর্নীতি প্রমাণিত হয়নি বলে উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। তাই যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ একধাক্কায় ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল।

৪. ‘বিচারপতি নিজে তদন্ত করতে পারেন না’

প্রাথমিকের এই মামলায় নিজে আদালতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই প্যানেলে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, এমন কয়েকজনকে ডেকে প্রশ্ন করেছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চের মতে, এটা রিট মামলায় এমনটা করা যায় না। সাক্ষী ডেকে বিচারক বা বিচারপতির নিজে থেকে প্রমাণ খোঁজা আইনসিদ্ধ নয় বলে উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, ‘আদালত মধ্যযুগের নাইট নয় যে মাথায় হেলমেট পরে ভাল-মন্দ খুঁজতে বেরব।’

ছত্রে ছত্রে যে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের সমালোচনা করা হয়েছে, এমনটাই বললেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই ঠিক ছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি মানবিক দিক থেকে বিষয়টি দেখে চাকরি বহাল রাখলেন।”