কলকাতা: “জনগণের সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা করার আগে আত্মসমালোচনা করা বেশি প্রয়োজন।” রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের তীব্র সঙ্ঘাতের আবহে ফেসবুকে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা বিজেপি নেতা শুভ্রাংশু রায়ের। শনিবার বারবেলায় মুকুল পুত্রের এই ফেসবুক পোস্টকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূলের টিকিটে দু’বার বিধায়ক হওয়া শুভ্রাংশুর ‘ঘরওয়াপসি’র জল্পনা।
একুশের ভোটে বিজেপির টিকিটে বীজপুর থেকে ভোটে লড়েন শুভ্রাংশু। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথমবার ভোটে জিতে বিধায়ক হলেও ছেলের গড় বাঁচাতে পারেননি মুকুল। সুবোধ অধিকারীর কাছে ভোটে হারতে হয় শুভ্রাংশুকে। আর এর মধ্যে যখন একাধিক তৃণমূল ত্যাগী বিজেপি নেতার ‘ঘরওয়াপসি’র সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে তখন বিজেপি নেতার এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র চাপানউতোর।
রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে এখন কেন্দ্র ও রাজ্যের সঙ্ঘাত তুঙ্গে। এই আবহে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির ছেলে শুভ্রাংশু কার্যত রাজ্য সরকারকেই সমর্থন করছেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্তত তাঁর ফেসবুক পোস্টে তেমনটাই ইঙ্গিত।
বাবা দল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলেই ছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করে ঘাসফুল শিবির। তার পর সে বছরের মে মাসে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। সে সময় তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুকুল রায় বলেছিলেন, ‘‘এরপর বিধায়কদের (তৃণমূল) বিজেপিতে যোগদানের লাইন পড়ে যাবে’’। যদিও একুশের ভোটের ফলাফলের পর তৃণমূলত্যাগী একাধিক বিজেপি নেতার ঘরওয়াপসির জল্পনা তীব্র হচ্ছে। সব্যসাচী দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালি গুহকে নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই দলবদলের জল্পনা উস্কে দিলেন শুভ্রাংশু রায়।
আরও পড়ুন: দল কি ছাড়ছেন? জল্পনা উড়িয়ে নিজেই টুইট করলেন মুকুল
তবে শুভ্রাংশু দলের যে আত্মসমালোচনা জরুরি বলে মনে করছেন, তা নিয়ে এখনও বিজেপির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
এ নিয়ে কী বলছে তৃণমূল? বিধানসভায় দলের উপমুখ্য সচেতক তাপস রায়ের টিপ্পনী, ‘এসব দেখেশুনে হাসি পায়।’ তাঁর কথায়, “এঁরা রাজনীতি করতে চায়, কিন্তু পরিপক্কতা আসেনি। দূরদৃষ্টিই নেই। ওনার বাবা তো আবার চাণক্য। এই উপাধি যে কে তাঁকে দিয়েছে জানি না।” শেষে তাপসবাবু যোগ করেন, “এঁরা ভালো করে বিজেপিটাই করুন। আজ ফলাফল (একুশের ভোটের) যদি উল্টো হত, তখনও এঁরা কী বলতেন সেটাও ঠিক করা ছিল।”