কলকাতা: কাঁকুড়গাছির নিহত বিজেপি নেতা অভিজিৎ সরকারের দাদা সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন খুনের হুমকি পাচ্ছেন তিনি। অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ সরকার এই ঘটনায় একজন পুলিশ আধিকারিক ও এক প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই পুলিশের তরফে অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করা হয়, বিশ্বজিৎ যা বলছেন, ভিত্তিহীন। সবটাই সাজানো, মিথ্যা।
সম্প্রতি বিশ্বজিৎ সরকার বেলেঘাটার এক প্রভাবশালী নেতা ও নারকেলডাঙা থানার প্রাক্তন ওসি শুভজিৎ সেনের বিরুদ্ধে খুনের হুমকির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। বিশ্বজিতের অভিযোগ, গত ১১ নভেম্বর রাত ১২টা নাগাদ দু’জন লোক তাঁদের বাড়িতে যান। সেখানেই হুমকি দেন। বিশ্বজিৎকে তাঁর ভাইয়ের খুনের অভিযোগের মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হয় বলেও দাবি অভিজিতের দাদার।
বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে। পুলিশের তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়, ওই অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আদালত সূত্রে খবর, এদিন অভিযোগকারীকে বিচারক বলেন, ১৬ ডিসেম্বররের মধ্যে হলফনামা জমা দিয়ে যা যা বক্তব্য তা জানাতে হবে।
দিন কয়েক আগে প্রাণনাশের হুমকি পান বলে অভিযোগ করেন বিশ্বজিৎ সরকার। তাঁর দাবি, বাইকে এসে তাঁর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই খুনের হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। মামলা প্রত্যাহার না করলে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। বিশ্বজিতের দাবি, দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়েছিল, যদি তিনি সিবিআই কর্তাদের কাছে নারকেলডাঙার ওই ওসি ও নেতার নামে কিছু বলেন, তা হলে খুন করা হবে।
এই ঘটনার পর লালবাজারে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। তবে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ তাঁর। সম্প্রতি সিবিআই দফতরেও যান বিশ্বজিৎ। কেন এই মামলায় কোনও অভিযুক্তই এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েনি, তা জানতে চান তিনি। একই সঙ্গে এই খুনের মামলায় দ্রুত যাতে তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়, সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানান। কারণ তিনি অন্যতম সাক্ষী, তাঁর জবানবন্দি গুরুত্বপূর্ণ বলেই দাবি করেন। তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন এই আশঙ্কা করছেন বলেও অভিযোগ করেন।
কাঁকুরগাছি অভিজিৎ সরকার খুনের অভিযোগের মামলায় তৎপর সিবিআই। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। চার অভিযুক্তের বাড়িতে অক্টোবরের শুরুতেই হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পলাতক অভিযুক্তদের উপর চাপ বাড়াতেই সিবিআইয়ের এই কৌশল। চার অভিযুক্তের বাড়িতে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। ওই চার জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। চার জনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তিন অভিযুক্তকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাঁরা কোথায় গিয়েছেন, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পরিবারের সদস্যদের।
প্রসঙ্গত, ভোটের দিন গলায় তার পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার হয় অভিজিৎ সরকারের মৃতদেহ। তাঁর পরিবার প্রথম থেকেই দাবি তোলে, বিজেপি করার অপরাধে অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে নিহতের পরিবার।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সামান্য কমল একদিনের সংক্রমণ, কমেছে নমুনা পরীক্ষাও