কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বহটুই হত্যাকান্ডের (Bagtui Massacre) তদন্তে নেমে পড়েছে সিবিআইয়ের (CBI) তদন্তকারী দল। কিন্তু বগটুইয়ের তদন্তভার রাজ্য পুলিশের সিটের হাত থেকে সরে যাওয়ায়, খুব একটা সন্তুষ্ট নন রাজ্যের শাসক শিবিরের একাংশ। ফিরহাদ হাকিম আগেই বলেছিলেন, বগটুইয়েসিবিআইয়ের দরকার ছিল না, সিট ভালই তদন্ত করছিল। সেই প্রসঙ্গই শনিবার ফের একবার শোনা গেল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়। শনিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, তদন্তকারীরা গিয়েছেন। এটাই স্বাভাবিক। রাজ্য প্রশাসন সবরকম সাহায্য করছে। কিন্তু সিঙ্গুরের তাপস মালিক, নেতাই এর মত ঘটনায় মানুষ বিচার পায়নি।” সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “তবে যদি দেখি বিজেপিকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূলকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে হেয় করার চেষ্টা হচ্ছে, তাহলে আমরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করব। আমরা দেখেছি, রামপুরহাটে যে ঘটনা ঘটেছে বা অন্যান্য যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বাম আমলে এত ঘটনা ঘটেছে, কোন সময় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন? সেটা তাঁরা তুলে ধরুক।”
সেই সঙ্গে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আঁতাতের প্রসঙ্গও ফের একবার উস্কে দেন তিনি। বললেন, “যেভাবে বিজেপি – সিবিআই একসঙ্গে রামপুরহাটের ঘটনাস্থল যাচ্ছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে, বিজেপি এবং সিবিআই এক সূত্রে বাধা। যেভাবে ঘন ঘন বিজেপি যাচ্ছে, তা দেখে সেটাই মনে হচ্ছে। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সিবিআই বিজেপির উপর থেকে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যদি আমরা দেখি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের নেতাকে ধরা হচ্ছে, বিজেপি নেতাদের আড়াল করা হচ্ছে, একটা নির্দিষ্ট প্রোপাগান্ডা অনুযায়ী চলছে তাহলে আমরা করা আন্দোলনে নামব।”
বগটুইয়ের হত্যাকান্ডের পর পরই রাজ্যের শাসক শিবিরের থেকে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, শর্ট সার্কিটের তত্ত্ব। এদিকে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও কখনও অরাজনৈতিক তত্ত্ব ও পরে বড়সড় ষড়যন্ত্রের কথা বলেছিলেন। এবার তাঁর মুখে আরও এক তত্ত্ব শোনা গেল। বললেন, “এখানে আদি বিজেপি ও নব্য বিজেপির মধ্যে লড়াই রয়েছে। এই লড়াই আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। পুলিশ তদন্ত করছিল। এখন সিবিআই তদন্ত করছে। তদন্তে পক্ষপাতিত্ব হবে না এটাই আশা করি।” সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। কিন্তু কোন সিবিআইকে নিরপেক্ষ বলছেন? তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি যাচ্ছে, অথচ এফআইআরে নাম থাকা সত্ত্বেও শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি যাচ্ছে না? এটাকে কি নিরপেক্ষতা বলা যায়?”
সেই সঙ্গে কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “রামপুরহাটে সিবিআইয়ের প্রয়োজন ছিল না। সিট সবরকম তদন্ত করছে। মুখ্যমন্ত্রী সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু সিবিআই এখানে তদন্তভার নিয়েছে। তাই তদন্ত নিয়ে আমার কিছু বলছি না। কিন্তু সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থার ভাল ভাল অফিসার হয়েছে। কিন্তু বিজেপির সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। বিরোধী বিজেপির শুধু মৃতদেহ চাই। শকুনের রাজনীতি করে যাচ্ছে।”
আরও পড়ুন : Kalimpong MLA: জিটিএ থেকে আলাদা করে দিন কালিম্পংকে, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বিধায়কের