কলকাতা: রাজ্যে এবার খুলে যাচ্ছে ছোটদের স্কুল (Schools Reopening in West Bengal)। নবান্ন থেকে জারি করা নতুন গাইডলাইনে এমনটাই জানানো হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুল খোলার ক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে, কোন কোন বিধি মেনে খুলছে স্কুল তা স্পষ্ট করল ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব প্রাইমারি এডুকেশন। রাজ্যর সমস্ত প্রাইমারি স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের জন্য এই বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, নির্দেশিকায় বলা হয়েছে কোভিড বিধি মেনেই স্কুল খুলতে হবে। উল্লেখ্য, বড়দের জন্য স্কুল আগেই খুলে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে ছোটদের জন্য স্কুলের বদলে চলছিল পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্প। সেই পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পকে ঘিরে বিভিন্ন জায়গায় নানবিধ সমস্যার কথা উঠে আসছিল। এই পরিস্থিততে, ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যের সব প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুল খোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল নবান্ন।
WBBPE-এর জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সোম থেকে শনিবারই চলবে স্কুল। তবে মানতে হবে কোভিড বিধি। স্কুলগুলিতে যথোপযুক্ত জীবাণুুনাশ হয়েছে কি না, কোভিড বিধি মানতে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, সেই সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা করতে ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবারই স্কুলে উপস্থিত থাকতে হবে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। ১৬তারিখ থেকে স্কুলে আসতে পারবে পড়ুয়ারা। হোস্টেল খোলা থাকবে কি না তা সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করতে পারবেন তবে কোভিড বিধি মেনেই হোস্টেল খুলতে হবে। প্রত্যেক পড়ুয়াকে স্কুল শুরু হওয়ার অন্তত একঘণ্টা আগে স্কুলে পৌঁছতে হবে। মাস্ক পরা, মাস্ক পরার প্রয়োজনীয়তা বোঝানো, সামাজিক দূরত্ববিধি পালন-সহ অন্যান্য কোভিড প্রোটোকলও মানা বাধ্যতামূলক বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
সূত্রের খবর, শুধু প্রাইমারি নয়, আপার প্রাইমারি ও অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র গুলিও খুলে দেওয়া হচ্ছে। রোটেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে স্কুল চালু হতে পারে। চলতে পারে এক একটি সেকশনের রোটেশন করে পড়ুয়াদের আনার ব্যবস্থা। নবান্নের নির্দেশিকা জারি হতেই কলকাতা পুরনিগমের শিক্ষাবিভাগ তড়িঘড়ি ভার্চুয়ালি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছে। সোমবার সন্ধেয় সেই বৈঠক হয়েছে। এরপরই ফিরহাদ হাকিম নির্দেশ দেন শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহাকে। মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী, মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা পুরনিগমের স্কুল বিভাগের চিফ ম্যানেজারের কাছ থেকে কলকাতা পুরনিগমের অন্তর্গত ১৭৫টি স্কুল ভবনের পরিকাঠামোগত রিপোর্ট তলব করেছেন।
বুধবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। স্কুলগুলির কী অবস্থা হয়ে রয়েছে, সেখানেই সামাজিক দূরত্ব মেনে পড়ুয়াদের কতটা বসানো সম্ভব, স্কুলগুলোর স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া কতটা শেষ হয়েছে, স্কুলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে কি না, স্কুলে পড়ুয়ারা যেখানে বসবে সেখান বেঞ্চ বা শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেখানে বসবেন সেই টেবিল-চেয়ার ঠিকমতো রয়েছে কি না, তার যাবতীয় রিপোর্ট চেয়েছেন শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ। ১৭৫ টি স্কুল ভবনে সকাল- দুপুর মিলিয়ে মোট ২৪১টি স্কুল চলে। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি এবং ওড়িয়া মাধ্যমের স্কুল রয়েছে কলকাতা পুরনিগমের অধীনে।
এদিকে স্কুল খোলায় খুশি কচিকাচারা থেকে অভিভাবকরাও। এক খুদে পড়ুয়ার কথায়,”এতদিন তো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল না, পড়াটাও ভাল করে হচ্ছিল না। ভালই হয়েছে স্কুলটা খুলেছে।” কী বলছেন অভিভাবকরা? অনেকেই বলছেন, স্কুল খুলতে অনেক দেরি হল। আরও আগে স্কুল খোলা উচিত ছিল। কেউ বা বলছেন, বাড়িতে পড়াশোনা হচ্ছিল না। স্কুল খুলে ভালই হয়েছে। তবে কোভিড বিধি মেনেই যেন পড়াশোনা চলে।