কলকাতা: নেতৃত্ব প্রমাণ দিয়ে বলুক, তিনি কোথায় দলবিরোধী কাজ করেছেন। তৃণমূলের তরফ থেকে সাসপেনশন অর্ডার পাওয়ার পর মুখ খুললেন প্রাক্তন সাংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন। আরজি কর কাণ্ডের পর আন্দোলনের সময় থেকেই দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বেড়়েছিল। আরজি করের প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছিলেন তিনি। তারপরই প্রথমে মুখপাত্র, তারপর মেডিক্যাল কাউন্সিলের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এবার সাসপেন্ডেড।
তবে কি আরজি কর কাণ্ডে মুখ খোলাই প্রধান কারণ? সাংবাদিক বৈঠক করে শান্তনু সেন বলেন, “আমার দল আমাকে যা দায়িত্ব দিয়েছে, আমি সবই করেছি। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যা দায়িত্ব দিয়েছেন, তাও করেছি। নেত্রী যা দায়িত্ব দিয়েছেন, তাও করেছি।” সন্দীপ ঘোষের নাম উল্লেখ করেই বলেন, “সন্দীপ ঘোষের নামে আমি দেড় বছর আগে গোপনীয়তা বজায় রেখে সুনির্দিষ্ট জায়গায় সব বলেছিলাম। সন্দীপ ঘোষের নেতৃত্বে আরজি করে দুর্নীতি চক্র বাসা বেঁধেছিল। জেল খাটা আশিস পাণ্ডেও আমার মেয়েকে হুমকি দিয়েছিল।”
আরজি কর কাণ্ডের পর একাধিক বৈদ্যুতিন মাধ্যমে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়ে দল অন্দরেই ঝড় উঠেছিল। সে সময়ে দলেরই কেউ কেউ নেত্রীকে ভুল বুঝিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি। শান্তনু সেন বলেন, “আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও নেত্রীকে বোঝাচ্ছিলেন, আমি নাকি এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছি। আমি তারপর নিজেকে সেখান থেকে সরিয়ে এনেছি। আমাকে গালিগালাজও শুনতে হয়েছে। এর থেকে দুর্ভাগ্যের তো কিছু হতে পারে না।”
তবে তিনি যে কী দলবিরোধী কাজ করেছেন, সেটা এখনও তাঁর কাছে স্পষ্ট নয় বলে জানান তিনি। শান্তনু সেন বলেন, “আমি খুব খুশি হব। আমার নেতৃত্ব যদি আমাকে বলে দেন, আমি কোন কোন দলবিরোধি কাজ করেছি। দেখিয়ে প্রমাণ করে দেন, যে আমি এই এই দলবিরোধী কাজ করেছি, আমি ক্ষমা চাইতে দ্বিধাবোধ করব না। আজকে পর্যন্তও আমি সংবাদমাধ্যমে বিরোধীদের বিষোদগার করেছি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দলের তরফে মনে করা হচ্ছে আমি দলবিরোধী কাজ করেছি।”
আরজি কর কাণ্ডে মুখ খোলাই যদি প্রধান কারণ হয়ে থাকে, তাহলে শান্তনু সেন সংশয় করছেন দলের তরফে এই শাস্তির খাঁড়া তাঁর স্ত্রীর ওপরেও নেমে আসতে পারে। কারণ তিনিও রাতজাগা আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ”
আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও দল যদি কোনও পদক্ষেপ করে, সেটা দলের সিদ্ধান্ত। তিনি নিশ্চিতভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক। কিন্তু তিনি একজন মা, এটা ভুলে গেলে চলবে না।”