কলকাতা: তাঁকে নিয়ে আগাগোড়াই সমস্যা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। এতটাই যে, তাঁর এজলাসে নন্দীগ্রামে মামলার শুনানি হোক, এটা কখনই চাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে সেই আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে সেই কৌশিক চন্দকেই বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি পদে নিয়োগ করল নিয়োগ করল সুপ্রিম কোর্ট।
হাইকোর্টের যে কোনও বিচারপতিকেই স্থায়ী করার আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মতামত জানতে চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও আইনজীবী মহলের একাংশ জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর মতামতের জেরে শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তে বিশেষ কোনও ফারাক পড়ে না। বাস্তবেও সেটাই হতে দেখা গেল। কিন্তু কৌশিক চন্দকে ঘিরে যেভাবে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছিল, তাতে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে আলাদা নজরেই দেখছে রাজনৈতিক মহল।
হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে নন্দীগ্রাম মামলাটি জায়গাটি পাওয়ার পরই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত হয়। বিচারপতি কৌশিক চন্দ পক্ষাপাতদুষ্ট, এই অভিযোগ তুলে মামলাটি অন্য এজলাসে সরানোর আবেদন জানান খোদ মুখ্যমন্ত্রী। কৌশিক চন্দের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আবেদন জানানো হয়, যেন এই মামলাটি অন্য বিচারপতির বেঞ্চে সরিয়ে দেওয়া হয়। বহু বাক বিতণ্ডার পর অবশেষে মামলাটি ছেড়ে দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ।
কিন্তু মামলাটি ছেড়ে দেওয়ার সময় বিচারপতি তোপ দেগে বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করা হয়েছে।’ সেই মর্মে তাঁকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তী সময় সেই জরিমানাও আদালতে জমা দেন মমতা। মামলাটি সরে যায় বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে। কিন্তু নন্দীগ্রামের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন ঘিরে যে পরিমাণ রাজনীতির জল আদালতে ঘোলা হয়, তা ছিল একপ্রকার নজিরবিহীন। সেই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহল ছিল সুপ্রিম কোর্ট আদৌ তাঁকে স্থায়ী বিচারপতির পদ দেয় কি না সেই নিয়ে। তবে আজকের সিদ্ধান্তের পর যাবতীয় বিতর্কের যবনিকা পতন হল বলা চলে। আরও পড়ুন: ৩ মন্ত্রীকে বেদম ঝাড়! প্রশাসনিক বৈঠকে রুদ্রমূর্তি মমতার