কলকাতা: ‘ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হলেন। এর আগে রাজ্যে এমনটা হয়নি।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজভবনে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পরই আক্রমণ ধেয়ে আসল যুযুধান প্রতিপক্ষ শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) তরফে।
তিনি বললেন, “ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হলেন। এর আগে এই রাজ্যে এমন হয়নি। ২১৩ জন বিধায়কের মধ্যে কাউকে খুঁজে পাওয়া গেল না মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। এই জন্য তো বলেছিলাম লিমিটেড কোম্পানি।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী- একদা একমুখী লড়াইয়ের দুই মুখই এবারের নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলেন। এই দুই মহারথীর লড়াই অত্যন্ত বেশি চিত্তাকর্ষক করে তুলেছিল নন্দীগ্রামকে। ২ মে, নির্বাচনের গণনাতেও দিনভর টানটান লড়াইয়ের পর একটা ট্যুইস্ট তৈরি হয়। প্রথমে বেলা চারটে নাগাদ জানিয়ে দেওয়া হয়, ১২০১ ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এএনআই-ও তা টুইট করে। পরে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই নাটকীয়ভাবে বদলে যায় ফল। ফের ঘোষণা করা হয় ১৬০০-র বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নন্দীগ্রামের ক্ষোভ জোরাল হতে শুরু করে।
উঠে পুনর্গণনার দাবি। রিটার্নিং অফিসারের কাছে যায় তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ফোনে আসা একটি এসএমএস দেখান। তাতে দেখা যায়, রিটার্নিং অফিসার তাঁর ঘনিষ্ঠ একজনকে জানিয়েছেন যে রীতিমতো খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তাঁকে। তাই তিনি পুনগর্ণনা করতে পারেননি। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন, নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে তিনি হাইকোর্টে যাবেন। গণনার দিন নির্বাচন কমিশনের সার্ভার ডাউন থানার বিষয়টিও ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। রিটার্নিং অফিসারের ওপর চাপ ও ইসি সার্ভার ডাউনের বিষয়টি তিনি হাইকোর্টে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
যদিও মঙ্গলবারই কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার কোনও প্রশ্ন নেই। এসবের মাঝেই বুধবার রাজভবনে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন মমতা। দায়িত্ব নেওয়া পর তিনি বলেন, “অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা বাংলার নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককেই আমার ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমাদের প্রথম কাজ কোভিডকে নিয়ন্ত্রণ করা।” তবে আত্মবিশ্বাস হারাননি প্রধান বিরোধী মুখ হিসাবে উঠে আসা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বললেন, “আমাদের লড়াই চলবে। যেভাবে মারা হচ্ছে , ধর্ষণ করা হচ্ছে – ভাবা যায় না। সব বিরোধী দল শপথ গ্ৰহণ অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”