‘৩ মাস কমিশনের হয়ে রাজ্য পুলিশ কাজ করেছে, কিছু অক্ষমতা ছিল, এবার দেখে নিচ্ছি’, ভোট হিংসার দায় এড়ালেন মমতা
তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) দায়ে নিলেন না।
বুধবার রাজভবনে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথবাক্য পাঠ করার পর তিনি নিজে তাঁর দায়িত্ব প্রসঙ্গে কিছু কথা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন। এরপর মাইক রাজ্যপালের হাতে দিয়ে তাঁকে কিছু বলতে অনুরোধ করেন। তখনই রাজ্যপাল রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। সাংবাদিকদের সামনেই রাজ্যপাল বলেন, ““দেশ, রাজ্য একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসাও হচ্ছে। আমি আশা রাখব নতুন সরকার কড়া হাতে দুই পরিস্থিতি জরুরি ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। আমি একটা নতুন সরকারের কাছে এটাই আশা রাখব।”
রাজ্যপালের কথা শেষ হতেই মাইক তাঁর হাত থেকে নিয়ে এ প্রসঙ্গের রেশ টেনেই উত্তর দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই হিংসার দায় তাঁর নয়। তাঁর বক্তব্য, “আমি এখুনি শপথ নিলাম। এর আগে নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে এই সরকারের পুলিশ কাজ করেছে। কোথাও কোথাও অশান্তি বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে যেখানে যেই দল জিতেছে, বেশি অশান্তি করছে। আজকে গিয়েই আমি নতুন সেটআপ তৈরি করব। গত তিন মাসে এই সেটআপ আমার ছিল না। অনেক ইনএফেক্টিভ, ইনএফিসিয়েন্সি ছিল। আমি দেখে নেব, কেউ যেন প্রতিহিংসাপরায়ণ না হয়।” কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে কড়া পদক্ষেপ নিতে তিনি পিছপা হবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগেই এই ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেন রাজ্যপাল। তিনি লেখেন, “এরকম হিংসার ঘটনা গণতন্ত্রের লজ্জা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। এই অবনতি অবহেলা করার মতো নয়।” মমতাকে শপথবাক্য পাঠ করানোর ঠিক আগেই এহেন ট্যুইট যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যের কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে রাজনৈতিক হিংসার খবর এসেছে। শুধু বিজেপি নয়, অন্যান্য দলের কর্মীদের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। আগেই এই ইস্যুতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে সোমবারই রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতার পুলিশ কমিশনার তলব করেছিলেন রাজ্যপাল।এ ছাড়া সোমবার সন্ধেয় পদত্যাগপত্র জমা দিতে রাজভবনে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতার সঙ্গেও অশান্তির ঘটনা নিয়ে কথা হয়েছিল তাঁর। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেন।