দু’ দিনের ভারত বনধের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (AITUC)। মঙ্গলবার তার শেষ দিন। দু’দিনই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পথঅবরোধ করে ধর্মঘটীরা। রাজ্যজুড়ে চলছে পিকেটিং-বিক্ষোভ-অবরোধ। কলকাতার পাশাপাশি বাঁকুড়া, বারাসত, আলিপুরদুয়ার, ধূপগুড়ি, ঘাটাল বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে বামেরা। যদিও ধর্মঘটীদের সংখ্যা খুবই কম। তবু রাস্তা আটকে বসে থাকার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে নিজের বক্তব্যের শেষে কেন্দ্রকে ‘খোঁচা’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের উদ্দেশে বললেন, এজেন্সি দিয়ে শিল্পপতিদের বিরক্ত না করতে বলুন কেন্দ্রকে। যা শুনে সম্মেলনে সামনের সারিয়ে বসে থাকা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় হেসে ফেললেন।
বিস্তারিত পড়ুন : ‘কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে শিল্পপতিদের যেন বিরক্ত করা না হয়’, মমতার অনুরোধে মুচকি হাসলেন ধনখড়
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থবিরোধী নীতির অভিযোগ তুলে বামপন্থী কৃষক ও শ্রমিক সংগঠনের দ্বিতীয় দিনের বনধে মিশ্র প্রভাব আলিপুরদুয়ারে। বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের ডাকা এই দ্বিতীয় দিনের বনধে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, সকালে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মিছিল বের করা হয়। বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি হলেও আলিপুরদুয়ারে তেমন ভাবে অশান্তির কোনও খবর নেই।
বেলা গড়ালেও দাসপুরে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় চেয়ার পেতে পেপার পড়ছেন বাম কর্মী সমর্থকদের। ঘাটাল পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের দাসপুর থানার সোনামুই এলাকায় এমনই ছবি দেখা গেল। স্বভাবতই এর জেরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ি। তীব্র যানজট হয় এলাকায়।
কোচবিহার শহর থেকে ১৫ জন বনধ সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানালেন পুলিশ সুপার সুমিত কুমার ।
কোচবিহারের কাছারির মোড়ে এসইউসিআই কর্মী সমর্থকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। কোচবিহারের সাগরদিঘির ঘটনা। এদিন ধর্মঘটীরা অফিস বন্ধ করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। এরপরই শুরু হয় বচসা।
দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীনে বনধের সমর্থনে ধর্মঘটীরা মিছিল করে। একইসঙ্গে বাঘাযতীন মোড়ে পথ অবরোধও করেন বনধ সমর্থনকারীরা। বাঘাযতীনে সিপিএম নেতা সুদীপ সেনগুপ্তর নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। সুদীপ সেনগুপ্তের কথায়, “আমাদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট। দেশের যা হাল, শিক্ষা, শিল্পের যেভাবে বেসরকারিকরণ হচ্ছে তার বিরুদ্ধেই সোচ্চার হয়ে আমরা পথে নেমেছি। এখানে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তারই বিরোধিতায় পথে নেমেছি আমরা। গত দু’ আড়াই মাস ধরেই পথে আছি আমরা।”
বেহালায় সিপিএম নেতা কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। শীলপাড়া থেকে শুরু হয়ে মিছিল তারাতলার দিকে যায়। মিছিল এর আগে ও পরে মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী।
মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের সুলতান নগর এলাকায় সকাল থেকে রাজ্য সড়ক অবরোধে নামে সিপিএম। জোর করে রাজ্য সড়কে গাড়ি আটকানোর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ঘাটাল পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের সুলতান নগর এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করে ধর্মঘটের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন বনধ সর্মথনকারীরা। যার জেরে তীব্র যানজট, রাজ্য সড়ক উপরে দাঁড়িয়ে পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে যাত্রীবাহী গাড়ি।
বাঁকুড়ার রাস্তায় নামেনি বেসরকারি বাস। তবে সরকারি বাস ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ছোট গাড়ি চলাচলও স্বাভাবিক। বাঁকুড়া জেলার গণপরিবহণ পরিষেবার বড় অংশই বেসরকারি বাসের উপর নির্ভরশীল। ফলে বেসরকারি বাস রাস্তায় না নামায় সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
বারাসত কলোনি মোড় চত্বরে মঙ্গলবার সকালে ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই সংগঠিতভাবে পথ অবরোধ করে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বনধের সমর্থনে। যদিও বারাসত থানার পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়।
সপ্তাহের শুরুতেই জানা গিয়েছিল, সুমিতে প্রায় ৬০০-রও বেশি পড়ুয়া আটকে ছিল। রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ৫০ কিমি দূরে থাকায়, গোলাবর্ষণের মাঝে তাঁদের পায়ে হেঁটে ফেরাও সম্ভব হচ্ছিল না। কেন্দ্রের কাছে পড়ুয়ারা সাহায্যের আর্জি জানালে, তাদের ধৈর্য্য ধরতে ও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী সাংবাদিকদের জানান, যে ৬৯৪ জন ভারতীয় পড়ুয়া ইউক্রেনের সুমিতে আটকে ছিল, তাদের উদ্ধার করে আনা হয়েছে। সুমি থেকে তারা পোলটোভার উদ্দেশে বাসে করে রওনা দিয়েছে।
Happy to inform that we have been able to move out all Indian students from Sumy.
They are currently en route to Poltava, from where they will board trains to western Ukraine.
Flights under #OperationGanga are being prepared to bring them home. pic.twitter.com/s60dyYt9U6
— Arindam Bagchi (@MEAIndia) March 8, 2022