কলকাতা: দুর্যোগের বৃষ্টিতে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। অনেকের ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে। চাষের জমি জলের দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ‘আত্মহত্যা’র তত্ত্বও উঠে এসেছে। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে বিরোধী শিবির। এবার পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দাবি করলেন, পুরোটাই ‘বিভ্রান্তিমূলক’ তথ্য। বললেন, “আমাদের রাজ্যে কৃষকদের আত্মহত্যার কোনও স্কোপই নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের জন্য যে যে বন্দোবস্ত করেছেন, তারপর কৃষকদের আত্মহত্যার কোনও সুযোগই নেই।”
রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রীর বক্তব্য, “কয়েক জায়গায় কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে, কৃষকের আত্মহত্যা বলে দেখানো হচ্ছে। কারণ দেখানো হচ্ছে, বৃষ্টিজনিত কারণে তাঁদের চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে এই আত্মহত্যা হয়েছে। এটা খুব অবাস্তব ঘটনা। এত বছর ধরে আমি মন্ত্রী আছি। আমাদের রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা বিরল। আমি খুব একটা শুনিনি কখনও।”
কেন কৃষকদের আত্মহত্যার স্কোপ নেই, সেই ব্যাখ্যাও দিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের সব কৃষকরা বাংলার শস্য বিমা যোজনার আওতায় রয়েছেন। ফলে একজন কৃষকও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। বললেন, “এই বিমার আওতাভুক্ত হওয়ার ফলে কোনও চাষির তো আর আত্মহত্যা করার কারণ নেই। কারণ, সেই টাকা তো তিনি পেয়ে যাবেন বিমায়।”
পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। মন্ত্রী জানালেন, ২০১৯ সাল থেকে রাজ্য এই বিমার জন্য প্রিমিয়াম দিয়েছে ৫ হাজার ৪২৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত বিমায় ক্লেম হয়েছে ২ হাজার ৪২৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বললেন, ‘সরকার অনেক টাকার প্রিমিয়াম দিচ্ছে। একজন কৃষকেরও আত্মহত্যার কোনও কারণ নেই।’ ফলে এত কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরও বাংলায় কৃষকদের স্কোপ কোথায়? প্রশ্ন শোভনদেবের।
উল্লেখ্য, পূর্বস্থলী ও খানাকুলের দুই কৃষক মৃত্যুর ঘটনাও এদিন উঠে আসে মন্ত্রীর গলায়। দু’টি ঘটনাই পারিবারিক গন্ডগোলের জের বলে ব্যাখ্যা করছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব। বললেন, “এগুলো সব পারিবারিক গন্ডগোল। আগেও ছিল। আত্মহত্যা আগেও ছিল দেশে, আমাদের রাজ্যেও ছিল, এখনও আছে। এই ঘটনাগুলিকে কোনওভাবে ম্যানেজ করে বলানো হচ্ছে, চাষ করতে গিয়ে ঘটেছে।”