কলকাতা: পুরভোট মামলার শুনানি পিছল। বিজেপির আইনজীবী এই মামলার শুনানি বুধবার করার আর্জি রাখেন। সেই আর্জির ভিত্তিতেই এই মামলার শুনানি পিছনোর কথা জানায় আদালত। এদিকে বুধবারই মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
এ রাজ্যে পুরসভা ও পুরনিগম মিলিয়ে মিশিয়ে রয়েছে ১২৫টি। এর মধ্যে ১১৮টি পুরসভা, ৭টি পুরনিগম। সর্ববৃহৎ পুরনিগম কলকাতা। ১৪৪টি ওয়ার্ড। রাজ্য সরকার প্রথমেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল তারা কলকাতা ও হাওড়ায় আগে ভোট চায়। ১৯ ডিসেম্বর সেই ভোটের আর্জি জানিয়েছিল শাসকদল। যদিও সেই দাবিতে সিলমোহর পড়েনি। কলকাতায় ১৯ তারিখ ভোট হলেও, হাওড়ায় আপাতত ভোট নয়।
কিন্তু এতগুলো পুরসভায় ভোট বাকি থাকলেও শুধুমাত্র একটিতে কেন ভোট হচ্ছে তা নিয়ে বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হয়। তারা সব জায়গায় একসঙ্গে ভোটের দাবি তোলে। সে মামলারই শুনানি ছিল সোমবার। এই মামলা আরও জটিল হয়ে ওঠে সম্প্রতি রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতায় ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর।
কারণ, এই কমিশনের আইনজীবীই আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যতদিন মামলার নিষ্পত্তি না হচ্ছে, তারা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে না। কিন্তু তারপরও কীভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি হল তা নিয়ে আদালতে সরব হন বিজেপির আইনজীবী।
বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার আগেই বলেছিলেন, “পুরভোট নিয়ে একটা ছেলেখেলা করছে রাজ্য সরকার। বাম আমলে এমন করা হয়েছিল, ইলেকশন কমিশন থেকে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা বেশি। কবে ভোট হবে, কাদের ভোট হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের যে ভূমিকা ভারতবর্ষের আর কোনও রাজ্যে নেই। বামেরা এই রাজ্যে একমাত্র এই নিয়ম করেছিল। তার উপরে এই রাজ্য সরকার ইচ্ছামতো বল প্রয়োগ করছিল। এত ভোট বাকি, বছরের পর বছর, অথচ এতদিন পর দু’ জায়গায় ভোট করবে। এটা তো চলে না। বালিটা ইচ্ছামতো একবার জুড়ে দিল। আবার বাদও দিয়ে দিল। কোনও নিয়ম মানবে না, শুধু নবান্নে বসে সই করবে আবার বিধানসভায় সংখ্যাগুরু তাই প্রস্তাব পাশ করবে।”
একই সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও সরব হয় বিজেপি। শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কমিশন আজ করেছে আমরা তাতে ধিক্কার জানাই। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। আমরা বিশ্বাস করি এই প্রশাসন দিয়ে, এই পুলিশ দিয়ে, এই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে কোনও ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করা সম্ভব নয়।”
সোমবার পুরভোটের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। সেখানেই উষ্মা প্রকাশ করে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কলকাতা হাওড়া-সহ সমস্ত কর্পোরেশন ও মিউনিসিপ্যালিটির নির্বাচন একইদিনে একই সময় করার দাবি নিয়ে আমরা আদালতে গিয়েছি। কিছু মানুষের আবেগ, তাঁদের দীর্ঘদিনের হতাশা, তাঁদের ক্ষোভকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমরা আগেরদিনও বলেছি, আদালতের দুর্বোধ্য অবস্থানের কারণে এক তরফা ভাবে কলকাতা পুরভোটের দিন ঘোষণা হয়ে গেল।”